আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি গোষ্ঠী দু’টোকে পশ্চিমাদের শক্র বলেই বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেই তাদের প্রধান লড়াই। কারণ এ জঙ্গি গোষ্ঠী দু’টির মূলোৎপাটন করতেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও অনেকেরই দাবি- এ গোষ্ঠী দু’টি উত্থানের পেছনেও যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে। যে যাই হোক বর্তমানে আল-কায়েদা থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠা আইএসয়ের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করেছে রাশিয়া। সিরিয়ায় আইএসয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ক্রেমলিন। ফলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, আইএসয়ের প্রধান টার্গেট এখন আর যুক্তরাষ্ট্র নয়, রাশিয়া।
সিরিয়া, ইরাক ও অন্যান্য এলাকার কয়েক হাজার আইএস যোদ্ধা আফগানিস্তানের পাহাড়ি এলাকায় জড়ো হয়ে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছে। শোনা যাচ্ছে, ক্রেমলিনে হামলার পরিকল্পনা করছে তারা। আইএসয়ের হাই কমান্ড নির্দেশ দিয়েছে, রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সব শহরে হামলা চালানোর। এ লক্ষ্যেই আফগানিস্তানে আইএস যোদ্ধারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
সম্প্রতি সেন্ট পিটার্সবার্গের মেট্রোতে হামলা চালায় এক আইএস যোদ্ধা। এতেই মোটামুটি ওই এলাকার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। উজবেক বংশোদ্ভূত রাশিয়ার এক তরুণ চলন্ত ট্রেনে হামলা চালায়। এতে ১৫ জন নিহত হয়। আহত হন কয়েক ডজন মানুষ। পরে জানা যায়, হামলাকারী ২০১৪ সাল থেকে সিরিয়ায় আইএসয়ের হয়ে লড়াই করেছে। এক বছরের বেশিসময় ধরেই রাশিয়া কঠোর নজরদারি করছে আইএসয়ের ওপর। আর এ কারণেই তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই রাশিয়া ও আফগানিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। এক দশক ধরে চলা যুদ্ধের পরই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়। এর পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি আফগান-রাশিয়ার সম্পর্কের কিছুটা উন্নিত হয়েছে।
‘৮০ দশকের ওই যুদ্ধে মুজাহিদিনদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আফগান আদিবাসী নেতা আহমাদ শাহ মাসুদ। তিনি ‘লায়ন অব পাঞ্জশির’ নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনী প্রত্যাহারের পর সেখানে, তালেবান, আল-কায়েদা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এমনকি আইএসয়ের জন্মও এই আফগানিস্তানেই।
আহমেদ শাহ মাসুদের ভাতিজা আফগান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জুবায়ের মাসুদ বলেন, ‘আইএস আফগানিস্তান ও প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য প্রধান হুমকিতে পরিণত হয়েছে। সিরিয়ায় যে জঙ্গিদের আপনারা দেখছেন তারাই এখন আফগানিস্তানে এসেছে। এসব সন্ত্রাসীরা তাজিকস্তান, উজবেকিস্তান ও চেচেনসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তারা কৌশলগত স্থান আফগানিস্তানে এসে জড়ো হয়েছে। কারণ তাদের প্রধান লক্ষ্য সীমানা পেরিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালানো।’ সূত্র : আল-জাজিরা।