সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > যুক্তরাষ্ট্রে সমকামী নাইট ক্লাবে হামলা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০

যুক্তরাষ্ট্রে সমকামী নাইট ক্লাবে হামলা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা শহরের অরল্যান্ডোতে সমকামীদের নাইট ক্লাবে শনিবারের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০’এ দাঁড়িয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার রাত দুইটার পালস ক্লাব নামে পরিচিত দিকে ওই নাইট ক্লাবে হামলা চালায় এক বন্দুকধারী।

এদিকে হামলার ওই ঘটনায় পুরো শহরজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ফ্লোরিডার মেয়র বুড্ডি ডায়ার। প্রথমে হামলাকারীর পরিচয় না জানা গেলেও পরে পুলিশ জানায় ওই হামলাকারীর নাম ওমর মতিন (২৯)। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটাই এ ধরনের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।

হামলাটিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেছে মার্কিন পুলিশ। ওই হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হামলাকারী কোনো বিশেষ গোষ্ঠির সঙ্গে সম্পৃক্ত কিনা তা এখনো জানা না গেলেও হামলাটিকে আদর্শিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।

এই ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে করছে স্থানীয় পুলিশ। তবে এতে জড়িতরা দেশি সন্ত্রাসী, নাকি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য তা তারা এখনো নিশ্চিত করেনি।

মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়’র কর্মকর্তা রোনাল্ড হপার বলেন, ‘আমরা আভাস পাচ্ছি যে লোকটির উগ্রপন্থী ইসলামি আদর্শের দিকে ঝোঁক ছিল। তবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি।’ মনে করা হচ্ছে, আক্রমণকারী একাই ছিল এবং সে এই এলাকার স্থানীয় কোনো বাসিন্দা নন।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশের বর্ণনা থেকে জানা যায়, পালস নামের নাইট ক্লাবটি শহরের সমকামীদের একটি প্রধান কেন্দ্র। সেখানে হামলার সময় হামলাকারীর হাতে ছিল দুটি আগ্নেয়াস্ত্র। একটি ছিল এ্যাসাল্ট রাইফেল আর অপরটি ছিল হ্যান্ডগান। এছাড়া তার গায়ে ‘বিস্ফোরক জাতীয় কিছু’ একটা বাঁধা ছিল।

ওই ক্লাবে থাকা এক ব্যক্তি রিকার্ডো আলমোডোভার পালস ক্লাবের ফেসবুক পাতায় লিখেছেন যে স্থানীয় সময় রাত দুইটার দিকে বন্দুকধারী গোলাগুলি শুরু করে।

তিনি লেখেন, ‘ওই সময় যারা নাচছিল এবং বারের কাছে যারা ছিল সবাই মাথা নীচু করে ফেলে। আর আমরা যারা বারের পিছনের দরজার কাছে ছিলাম তারা কোনোমতে ক্লাব থেকে বের হয়ে দৌড় দেই।’

আরো একজন প্রত্যক্ষদর্শী অ্যানথনি টরেস তখন বলেন যে তিনি মানুষকে চিৎকার করতে শুনেছেন, নাইটক্লাবের অনেকে হয়তো নিহত হয়েছেন।

এর আগে পাওয়া বর্ণনা মতে, আক্রমণকারী সুইসাইড ভেস্ট বা আত্মঘাতী হামলাকারীরা যে ধরনের বিস্ফোরকভর্তি পোশাক পরে- তা পরা ছিলো। বন্দুকধারী নাইটক্লাবের ভেতরে চারদিকে নির্বিচারে গুলি করতে থাকে এবং কিছু লোককে জিম্মি করে।

প্রথম গুলিবর্ষণের প্রায় তিন ঘণ্টা পর পুলিশ জিম্মিদের উদ্ধারের জন্য নাইটক্লাবের ভেতরে ঢোকার সিদ্ধান্ত নেয়। ভেতরে ঢোকার পর বন্দুকধারীর সাথে পুলিশের গুলিবিনিময় হয় এবং এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে বন্দুকধারী নিহত হয়। এরপর পুলিশ আক্রমণকারীর গায়ে বাঁধা বস্তুটির একটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটায়।

ধারণা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্ট সেন্ট লুইস থেকে আসা ওই হামলাকারী আফগানিস্তান বংশোদ্ভূত। কোনো সন্ত্রাসী তালিকায় তার নাম না থাকলেও বর্তমানে হামলাকারীর বিরুদ্ধে সন্দেহজনক একটি মামলার তদন্ত চলছিল। এদিকে হামলায় আহতদের স্বজনরা তাদের দেখতে স্থানীয় হাসপাতালে ভীড় জমাচ্ছে।

এদিকে ওই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মৃত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই এবং তাদের শান্তির জন্য প্রার্থনা করি।’

ঠিক একদিন আগে ফ্লোরিডাতেই এক গায়িকাকে গুলি করে হত্যা করে এক দুবৃত্ত। পরে সে নিজেও আত্মহত্যা করে।