সাথী ॥
নারী মানেই কোমল, পেলব একটি শরীর। মেয়েদের শরীর নরম শুধুমাত্র কোনো ধারণা নয়, বাস্তবেও তাই। মেয়েদের শরীর সাধারণত ছেলেদের তুলনায় অনেক অনেক বেশি নরম। কিন্তু এমনটা কেন? এর পেছনে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যাই বা কী? বিজ্ঞান বলছে, মূলত তিনটি বিষয়ের জন্য এমনটা হয়- জিন, হরমোন এবং জীবনযাপনের ধরন মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রাধান্যের জন্য মেয়েদের ত্বক পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি তৈলাক্ত হয়।
ত্বকের কোমল ভাব অনেক বেশি থাকে। এ কারণে সামগ্রিকভাবেই মেয়েদের শরীর নরম লাগে। মেয়েদের কোমল শরীরের পেছনের মূল নিয়ামক কিন্তু জিন। আদিম মানব এবং মানবীরা যতদিন একসঙ্গে শিকার করেছে ততদিন নারী-পুরুষ দুই শরীরই কঠিন এবং পেশীবহুল ছিল।
কৃষিভিত্তিক সভ্যতার সূত্রপাতের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের ভূমিকা পাল্টে যেতে থাকে। অত্যন্ত কঠিন শারীরিক পরিশ্রমের পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত হালকা বাড়ির কাজেই অভ্যস্ত হয়ে ওঠে নারী শরীর। এ অভ্যাসই জিনবাহিত হয়েছে প্রায় দু’হাজার বছর ধরে। তাই আদিম মানবীর জিনগঠনের সঙ্গে আধুনিক মানবীদের জিনগঠনে বহু পার্থক্য, বিশেষ করে শারীরিক কোমলতার নিরিখে।
যুগ যুগ ধরে এক প্রজন্ম থেকে আর এক প্রজন্মে বাহিত হওয়া জিনই মেয়েদের শরীরের কোমলতার মূল কারণ। এর কারণেই মেয়েদের মাংসপেশীতে ফ্যাটি টিস্যুর পরিমাণ ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি।
মেয়েদের শরীরের হাড় ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি পাতলা হয়। এ কারণেও মেয়েদের শরীর অনেক বেশি নরম লাগে।
কী ধরনের জীবনযাপন করেন একজন নারী তার উপরেও নির্ভর করে শরীর কতটা কোমল থাকবে। যে নারী মাউন্টেনিয়ারিং করেন তার তুলনায় যিনি হোমমেকার তার শারীরিক কোমলতা স্বাভাবিকভাবেই বেশি হবে।
মূলত জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণেই মেয়েদের শরীর নরম এবং পুরুষদের শরীর অনেক বেশি শক্ত হয়ে থাকে। যদিও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কাজ মানুষ হিসেবে নারী পুরুষের একই রকম তবুও হরমোনের এবং জিনগত পার্থক্যের কারণে এগুলোর গাঠনিক বৈশিষ্ট্য কিছুটা ভিন্ন। এছাড়া নারী পুরুষের লাইফ স্টাইলের ভিন্নতার কারণেও ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
শরীরে টেস্টোস্টেরনের আধিক্যের কারণে পুরুষের শরীর নারীদের তুলনায় শক্ত হয়ে থাকে। এর ফলে পেশী ফুলে যায় এবং শরীর টানটান হয়ে থাকে।
এছাড়া পেশীতে থাকা ফাইবারের ভিন্নতার কারণেও মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের শরীর শক্ত হয়ে থাকে। পেশীর গঠন কাঠামো নারী পুরুষের একই রকম থাকলেও বংশগত বৈশিষ্ট্য এবং প্রতিদিনের দৈহিক পরিশ্রমের কারণে ফাইবারের কম বেশি হয়ে থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই নারীদের শরীর নরম এবং পুরুষের শরীর শক্ত হয়ে থাকে।