সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর রশীদ খানের বর্নাঢ্য কর্মময় জীবন

মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর রশীদ খানের বর্নাঢ্য কর্মময় জীবন

শেয়ার করুন

শামসুল হুদা লিটন
বিশেষ প্রতিনিধি
কাপাসিয়ার তারাগঞ্জ অঞ্চলের একডালা গ্রামের রতœগর্ভ সন্তান মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর রশীদ খান ছিলেন এলাকার অহংকার ও গর্ব। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক মেধাবী ও চৌকস কর্মকর্তা। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। ১৭ জুলাই, রবিবার রাতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ খান ছিলেন বর্নাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী। তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবনের উলে­খযোগ্য কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
জন্মঃ তিনি ১৯৩৯ সালে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক একডালা দূর্গের স্মৃতিবিজড়িত জনপদখ্যাত একডালা গ্রামের এক সম্ভান্ত মুসলিম খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক মরহুম ডাঃ আব্দুর রশীদ খান ও মহীয়সী মাতা মরহুমা কুরছিয়া বেগম।
পারিবারিক জীবনঃ মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ ছিলেন ৩ ভাই, ৩ বোনের মধ্যে সবার বড়। মেঝো ভাই ও ২ বোন চলে গেছেন না ফেরার দেশে। একমাত্র জীবিত আছেন সবার ছোট ভাই আজগর রশীদ খান। আজগর রশীদ খান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি। পারিবারিক জীবনে মনজুর রশীদ খান স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ছেলে মেয়ে সবাই উচ্চ শিক্ষিত ও কানাডা প্রবাসী।
শিক্ষা জীবনঃ ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তারাগঞ্জ এইচ এন উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে পিতার কর্মস্থল নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ।
কর্মজীবনঃ মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ খান ১৯৬৪ সালের ১৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন । ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের শিয়ালকোট রণাঙ্গনে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । ১৯৭১ সাল থেকে প্রায় আড়াই বছর পাকিস্তানে অন্তরীণ জীবনযাপন করেন । ১৯৭৩ সালে দেশে ফিরে মেজর হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ রাইফেলস ও সেনা সদর দপ্তর, দুটি আর্টিলারি ও পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন । তিনি ১৯৮৬ সালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানার প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। প্রথমে রাষ্ট্রপতি জেনারেল এরশাদ এবং পরে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে এরশাদ-বিরোধী গণঅভ্যুত্থানের মুখে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ছিল তাঁর জীবনের উলে­খযোগ্য ঘটনা। তিনি ১৯৯৫ সালে বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিনের শাসনামলে ট্রুথ কমিশনের সদস্য ছিলেন।
লেখক ও কলামিস্টঃ তিনি ছিলেন একজন উচুমানের লেখক, কলামিস্ট ও সামরিক বিশ্লেষক। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, সংবাদ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় তিনি নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় কলাম লিখতেন। তিনি বেশ কয়েকটি আলোচিত ও পাঠক নন্দিত গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে এরশাদের পতন ও সাহাবুদ্দীনের অস্থায়ী শাসন: কাছে থেকে দেখা, আমার সৈনিক জীবনঃ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, ইত্যাদি।
সামাজিক সংগঠনঃ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি তারাগঞ্জ এইচ এন উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ গভর্ণিংবডির সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কাপাসিয়ায় ১৬১টি পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হবে
কাপাসিয়া প্রতিনিধি
গাজীপুর : মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদান উপলক্ষ্যে কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসন প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করে।
প্রেস ব্রিফিং এ কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোর্শেদ খান জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে কাপাসিয়ায় ১৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আগামী ২১ জুলাই ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হবে। সারা দেশের এ কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর কাপাসিয়ার সংসদ সদস্য বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি ১৬১টি পরিবারের হাতে জমির কাগজপত্র ও ঘরের চাবি তুলে দিবেন।
প্রতিটি পরিবার পাবে ২ টি রুম, টয়লেট, বারান্দা, রান্নাঘরসহ জমি। প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সরকার ভূমি ও গৃহহীনদের ঘর উপহার দিচ্ছে। এ জমি ও ঘর তাদের। তাই সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য তারা নিজেদের মত করে কাজ করে নিতে পারবে। প্রতি ১০টি পরিবারের পানির জন্য ১টি সাবমাসিবন ব্যবস্থা বয়েছে।
এ ধাপে কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নে ৬৫টি, বারিষার ইউনিয়নে ২৮টি ও তরগাঁও ইউনিয়নে ৬৮ পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার( ভূমি) রুবাইয়া ইয়াছমিন, সমবায় কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোর্শেদ মূধা, মৎস কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ প্রমুখ।
উলে­ক্ষ্য ১ম ও ২য় পর্যায়ে কাপাসিয়ায় ১১২টি পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করা হয়েছিল।