সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ‘মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে কোনো বাধা নেই’

‘মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে কোনো বাধা নেই’

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ঢাকা: মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে এখন আর কোনো অসুবিধা বা বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানান তিনি।

রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করে সন্তুষ্টিও জানিয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা।

ফাঁসির রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে এ রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

‘রায় নিয়ে উদ্বিগ্ন’- তার সোমবারের (২৯ আগস্ট) মন্তব্যের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ মামলার আইনজীবী হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন ছিলাম। এই মৃত্যুদণ্ড অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে বহাল রয়েছে। এটা বহাল না থাকলে সমগ্র জাতি এবং আমি আমরা সবাই হতাশ হতাম। ফাঁসি বহাল থাকায় এখন পুরো জাতিই খুশি, সবাই সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের অপেক্ষায়’।

রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, এ রায়ের মধ্য দিয়ে মামলার আইনি লড়াই শেষ হয়েছে। মীর কাসেমকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকরে এখন আর কোনো অসুবিধা বা বাধা নেই। তবে তিনি যদি মনে করেন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হবে, তিনি প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি-না। প্রাণভিক্ষা চাইলে রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া থেমে থাকবে। আর প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পর আবেদন নাকচ হলে সরকারের সিদ্ধান্তে ফাঁসি কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রিভিউ খারিজের রায় দ্রুতই পৌঁছে যাবে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হলে তাও দ্রুত পৌঁছাবে। ফলে রায় কার্যকরে ধীরগতির কোনো সুযোগও নেই’।

এ পর্যন্ত যতো যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে মীর কাসেম আলীর অপরাধ তাদের থেকে ভিন্নতর কিছু না উল্লেখ করে তিনি জানান, যে অপরাধে তার ফাঁসি বহাল রয়েছে (১১ নম্বর অভিযোগ) সেটি সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই প্রমাণিত হয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, মীর কাসেম আলী তার ডালিম হোটেলে টর্চার সেন্টার তৈরি করেছিলেন। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতন করতেন। সেখানে তাদের মুখ থেকে নানা কথা আদায়ের জন্য তাদের ওপর ভীষণ রকম অত্যাচার করা হতো।

এ অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন একজন আইনজীবী শফিউল আলম। তাকে ওই টর্চার রুমে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় তার নাক-মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছিলো। রুমের ভেতর অন্য যারা ছিলেন, তারা তাকে বসিয়ে দিয়েছিলেন।

শফিউল আলমই লক্ষ্য করেছেন, একদিন মীর কাসেম আলী ও তার সহযোগীরা একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন তাদের রুমে। কিছুক্ষণ পরেই শফিউল আলমের কোলেই সেই মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন মারা যান।

শফিউল আলম অন্য সাক্ষীদের কাছে বলে গিয়েছিলেন, মীর কাসেমের কথা। এবং মীর কাসেম যে  স্বয়ং  এ সমস্ত অত্যাচারে অংশ নিতেন  এবং অত্যাচার তারই নির্দেশে করা হতো- এ মর্মেও প্রত্যক্ষ সাক্ষীরা মামলার সাক্ষ্য দিয়েছেন। কাজেই জসিম হত্যার পেছনে মীর কাসেম আলী জড়িত এটির সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে।

এ মামলাটি যদি আরও সঠিকভাবে পরিচালনা করা যেতো সেক্ষেত্রে  ১২ নম্বর অভিযোগেও মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকতো বলেও মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।