শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > মিয়ানমারে হাসিনা-মনমোহন শেষ বৈঠক

মিয়ানমারে হাসিনা-মনমোহন শেষ বৈঠক

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিং আগামী মাসে মিয়ানমারে শীর্ষ বৈঠকে বসছেন ।দুই নেতার মধ্যে এটিই হচ্ছে শেষ বৈঠক। সোমবার ভারতের শীর্ষ বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে প্রকাশিত এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।

বিমস্টেক সম্মেলনে যোগ দিতে মিয়ানমারে নিজের মেয়াদের শেষ বিদেশ সফরে যাচ্ছেন মনমোহন। ভারত এবং বাংলাদেশ ছাড়াও এই গোষ্ঠীতে রয়েছে মিয়ানমার,ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশ। আনন্দবাজার জানায়, মূল সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক হবে মনমোহন-হাসিনার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করে সদ্য ফের ক্ষমতায় এসছেন। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন দশ বছরের মেয়াদ শেষ করে প্রস্থানের পথে। এটা এখন স্পষ্ট, কংগ্রেস বা ইউপিএ ক্ষমতায় ফিরলেও মনমোহন আর প্রধানমন্ত্রী থাকছেন না। তাই মনমোহন-হাসিনার আসন্ন বৈঠকে থাকবে গত পাঁচ বছরের চাওয়া-পাওয়ার হিসেব। পাশাপাশি সাউথ ব্লকের তরফে ঢাকাকে জানানো হবে , সরকার বদল হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কোনও পরিবর্তন হবে না। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, ভারতের নিজস্ব কৌশলগত এবং নিরাপত্তার স্বার্থেই ঢাকার সঙ্গে সম্পাদিত সব বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত পদক্ষেপ আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরি নয়াদিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে গিয়েছেন। দূতাবাস সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে মনমোহন সিং সীমান্ত নিরাপত্তা ক্ষেত্রে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিরিনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।

আনন্দবাজার জানায়, বাংলাদেশে নির্বাচন পরবর্তী সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় শঙ্কিত ছিল ভারত। সীমান্তে চূড়ান্ত সতর্কতা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিকে। বিপুল অনুপ্রবেশ এবং সীমান্তে সহিংসতারও আশঙ্কা ছিল নয়াদিল্লির। পরবর্তী কালে দিল্লির সরকার জানিয়েছে যথেষ্ট ভাল ভাবেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে ঢাকার নতুন সরকার। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্পিকারকে আশ্বাসও দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে ভারতের বাংলাদেশ নীতিতে অবশ্যই প্রাধান্য পাবে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রফতানির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, বাংলাদেশ প্রশ্নে নিজ সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কিছু হতাশাও রয়েছে মনমোহনের। তিনি ২০১১ সালে ঢাকা সফরে গিয়ে কথা দিয়েছিলেন, তাঁর বর্তমান মেয়াদেই তিস্তা এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদন করবেন। সেই মর্মে নির্দেশও দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে। দু’দেশের মধ্যে বারবার কূটনৈতিক আলোচনাও হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীণ দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে এই চুক্তিগুলি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি মনমোহনের পক্ষে। তিস্তা ফেঁসে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তিতে। স্থলসীমান্ত চুক্তিটি সংসদে পাশ করানোর জন্য প্রয়োজন ছিল দুই তৃতীয়াংশ সমর্থন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বেঁকে বসায় তা বাস্তবায়িত করতে পারেনি মনমোহন সরকার।মিয়ানমার বৈঠকে মনমোহন হাসিনাকে সেই হতাশার কথ্ওা বিস্তরিত বলবেন বলে জানায় আনন্দবাজার।

তবে ভারত মনে করছে, এই চুক্তি দু’টি না হলেও নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যিক লেনদেনের প্রশ্নে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে দু’দেশ। মদ এবং তামাকজাত দ্রব্য ছাড়া বাংলাদেশের সব পণ্যকেই ভারতের বাজারজাত করার অনুমতি দিয়েছে নয়াদিল্লি।

কম সুদে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়াসহ আরও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ঢাকাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিয়েছে নয়াদিল্লি। অন্য দিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে আলফা-সহ ভারত বিরোধী উত্তরপূর্বাঞ্চলের সন্ত্রাসের ঘাঁটি প্রায় নির্মূল করেছে হাসিনা সরকার। বাংলামেইল