আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
মিয়ানমারে ভয়াবহ সোয়াইন ও স্থানীয়ভাবে পরিচিত বার্ড ফ্লু’র প্রাদুর্ভাবে ৮দিনের জাতীয় ধর্মীয় উৎসব বাতিল করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১০ ছাড়িয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক। ১৮২ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দেশটির বৃহৎ ধর্মীয় উৎসবে যেহেতু দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মীয় অনুসারীরা যোগ দিতে আসবেন এবং তারা যাতে সোয়াইন ফ্লু’তে আক্রান্ত না হয়ে পড়েন এজন্যে এ উৎসব বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার সোয়াইন ফ্লু’তে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭। মিজিমা নিউজ বলছে, তা বেড়ে ১০ ছাড়িয়ে গেছে। মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪১ জন।
এদিকে মিয়ানমার বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে। বার্ড ফ্লু সম্পর্কে আতঙ্কিত না হতে দেশটির সরকার সাধারণ মানুষের কাছে আহবান জানিয়ে শপিংমল বা জনসমাগম হয় এমন স্থান এড়িয়ে চলতে বলেছে। মিয়ামারের স্বাস্থ্য বিভাগের উপ পরিচালক থান তুন অং বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু’র কাছে বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের তাং পিয়নে ৮দিনের ধর্মীয় উৎসব সোয়াইন ফ্লু’র কারণে বাতিল করা হয়েছে। মান্দালয়ের প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী জ মিন্ট মং বলেছেন, পাছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এমন আশঙ্কায় উৎসবটি বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে উৎসব কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। মিয়ানমারের জাতীয় ধর্মীয় উৎসবে বৌদ্ধ ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ৩৭টি আরাধনার আয়োজন করা হয়। বাৎসরিক এ ধর্মীয় উৎসব শতাব্দীকাল থেকে হয়ে আসছে। এ উৎসব সমকামী ও হিজরা সম্প্রদায়দের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, এইচ ফাইভ এন ওয়ান ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইয়াঙ্গুনে যা বার্ড ফ্লু হিসেবে পরিচিত। সর্বপ্রথম গত ১৫ জুলাই ইয়াঙ্গুন হাসপাতালে বার্ড ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৮ জুলাই আরেক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইয়াঙ্গুন জেনারেল হাসপাতাল থেকে বার্ড ফ্লু’তে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নর্থ ওকালাপা হাসপাতালে স্থানান্তরের পর সে মারা যায়। মিয়ানমারের স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বার্ড ফ্লু’র ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারিভাযান শুরু করেছে। তবে গত ২১ থেকে ৩০ জুলাই বার্ড ফ্ল’তে আক্রান্ত ১৮২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর আগে ২০০৯ সালে মিয়ানমারে প্রথম বার্ড ফ্লু দেখা দেয় এবং ওই সময়ে সারাবিশ্বে এ ভাইরাসে ৫ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ মারা যায়। গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলে বার্ড ফ্লু দেখা দেওয়ার পর স্কুল বন্ধের ঘোষণা দেয় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সেখানকার একটি মুরগীর খামার থেকে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছ্।ে সহ¯্রাধিক মুরগি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে বলেও ওই খামারি দাবি করছেন।
মিজিমা/ইয়েনিসাফাক