রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট গঠনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প খরচে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ার কোনো কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চাইলে সরাসরি এদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে চাহিদা পাঠাবে। অথবা মালয়েশিয়ার কোনো রিক্রুটিং এজেন্সিও এদেশ থেকে কর্মী নিয়ে নিয়োগ দিতে পারে। এর ফলে কোনো সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকতে পারবে না।

তিনি বলেন, বৈঠকে ন্যূনতম অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানো, উভয় দেশের রিক্রুটিং এজেন্সির সম্পৃক্ততার পরিধি, মেডিকেল পরীক্ষা এবং কর্মীর সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা এবং ডাটা শেয়ারিং বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, অভিবাসনবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলম এমপি অভিযোগ করেন, মালয়েশিয়া সরকারের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার সিন্ডিকেট করার জন্য প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। এতে তারা বিরক্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে না। কারা এই প্রস্তাব দিচ্ছে সেটা তদন্ত হওয়া দরকার বলে জানান।

গত ৪ নভেম্বর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় যায়। ৬ নভেম্বর পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার সংসদ ভবনে দুই দেশের মন্ত্রীপর্যায়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ বিষয়ে ইসরাফিল আলম বলেন, আমি মন্ত্রীর সঙ্গে গিয়েছিলাম। শ্রমবাজার নিয়ে এদেশের মানুষ যেটা চায় আমি ওখানে গিয়ে ভিন্ন কিছু দেখতে পেয়েছি। আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, মালয়েশিয়ায় কোনো সিন্ডিকেট করার প্রয়োজন নেই। সারাবিশ্বে শ্রমিকরা যেভাবে যায়, মালয়েশিয়ায় সেভাবেই যাবে এবং মালয়েশিয়া সরকার সিন্ডিকেট চায় না বলেই মাহাথির মোহাম্মদ ক্ষমতাগ্রহণ করার কয়েকদিন পর সিন্ডিকেট বাতিল করে দেন। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও আমলা মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী এবং আমলাদের সঙ্গে নেক্সাস (যোগসূত্র) করে আবার ১০ এর জায়গায় ৩৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির একটা সিন্ডিকেট তৈরির চেষ্টা করছে। তার আলামত, তথ্য-প্রমাণ অনেক কিছুই আমার কাছে আছে। আমি ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে তিন দিনের সফর একদিনে শেষ করে সব জেনে চলে এসেছি। সিন্ডিকেট মালয়েশিয়াতে হবে- এটা প্রধানমন্ত্রী চান না।

এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা সিন্ডিকেট চাইনি। উনি হয়তো ওনার কথা বোঝাতে চেয়েছেন। আমার মন্ত্রণালয় নিয়ে কথা বলার অধিকার ইসরাফিল আলমের নেই।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, স্বল্পখরচে কর্মী পাঠানোর পাশাপাশি মালয়েশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে কর্মীদের একবার মেডিকেল করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগে মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মীর দুইবার মেডিকেল করতে হতো। আমরা বলেছি, বাংলাদেশে করা মেডিকেল রিপোর্ট অনলাইনে মালয়েশিয়ার কাছে পাঠানো হবে। তারা অনুমোদন করলে কর্মী পাঠানো হবে। তারা সম্মত হয়েছে।

এছাড়া বৈঠকে কর্মীদের সেভিং স্কিম নিয়েও অলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। এই স্কিমের আওতায় কর্মীদের বেতনের কিছু অংশ কেটে রাখবে মালয়েশিয়া। দেশে ফেরার সময় তা ফেরত দেয়া হবে। মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে কর্মীদের বেতনের ২০ শতাংশ কেটে রাখার কথা বলা হয়, তবে বাংলাদেশ চার শতাংশের পক্ষে মত দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের বিধিনিষেধও আছে। এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভার পর বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ পুনরায় শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।