বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যাচেষ্টা ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার দলের প্রচার বিভাগের এস আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এই আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ফেনীর সোনাগাঝী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় নুসরাত জাহান রাফি নামের এক ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই। মানুষ যে এত নিষ্ঠুর হতে পারে তা কোনো সভ্য মানবসমাজে কল্পনাও করা যায় না। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মানুষ নামের কলঙ্ক।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই নারী হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও নারীদের পুড়িয়ে হত্যা এবং হত্যার অপচেষ্টার খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কী সাংঘাতিক অবনতি ঘটেছে। এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের চরম অবনতি ঘটার কারণেই সমাজে নৈরাজ্য চলছে। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার না থাকার কারণেই সমাজে অরাজকতা চলছে। এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমি সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে ডা. শফিকুর আরও বলেন, মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং অগ্নিদগ্ধ ছাত্রীর আশু সুস্থতা কামনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার পরিবার-পরিজনদের প্রতি সহানুভূতি ও সমবেদনা জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ মাদরাসাটির অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাহ ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন- এমন অভিযোগ এনে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
ওই ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। অন্যদিকে আরেকটি অংশ শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।
এরই মধ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে ওই ছাত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় গত রোববার থেকে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।