বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ মস্কোর বিমানবন্দরে ছয় বছর ধরে নগদ ২০ বিলিয়ন ইউরোর একটি কারগো ছয় বছর ধরে পড়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ এর মালিকানা দাবি করেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটা হয়তো ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের গোপন সম্পদের অংশ হতে পারে। কারগো বিভাগের কঠোর নিরাপত্তাধীনে এ বিপুল অর্থ এখন রাশিয়াতে রয়েছে। ওই কারগোতে ২০০টি কাঠের বাক্সে করে কাগুজে নোটগুলো রয়েছে। এর একটি বাক্সে ১০০ মিলিয়ন ইউরো করে রয়েছে বলে ডেইলি মেইল দাবি করেছে। রাশিয়ার কাস্টম বিভাগ বলেছে, এ অর্থের প্রকৃত মালিককেই সশরীরে উপস্থিত হয়ে এর মালিকানা দাবি করতে হবে। তবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ভুয়া মালিকের মালিকানা দাবি করলেও কেউই তারা রাশিয়ান কর্তৃপকে আশ্বস্ত করতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, সম্ভবত এর মালিকানা ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের। নগদ এ অর্থ সবই ১০০ ইউরোর নোট। ২০০৭ সালের ৭ই আগস্ট ফ্যাঙ্কফ্রুট থেকে মস্কোতে এটি পাঠানো হয়েছিল। সেই তখন থেকে বিমানবন্দরের কারগোতেই সেগুলো পড়ে আছে। রাশিয়ার সূত্র বলছে, কর্তৃপ বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও এর প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে পারেনি। প্রকৃত কোন প্রাপকের ঠিকানা ছাড়াই সেগুলো মস্কোর বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে। সাদ্দাম পতনের চার বছর পর এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আটমাস পর এ অর্থ কেন জার্মানি থেকে রাশিয়াতে পাঠানো হয়েছে সেটা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে এ অর্থের ব্যাপারে এটাই কেবল প্রচলিত তত্ত্ব নয়। বিভিন্নভাবে দাবি করা হয় মতা থেকে উৎখাত হওয়ার আগে সাদ্দাম হোসেন কূটনৈতিক ব্যাগে করে ৭৫০ কোটি পাউন্ড মস্কোতে পাঠিয়েছিলেন। তবে সেই অর্থের পরিমাণও তার মোট সম্পদের সঙ্গে খাপ খায় না। নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, এ অর্থের উৎসের ব্যাপারে অন্যান্য সম্ভাবনাগুলোও বিবেচনা করা হচ্ছে। বিদেশে সম্পদ সরিয়ে নেয়া সাদ্দাম হোসেনই কেবল একমাত্র স্বৈরশাসক নন। গাদ্দাফির সঙ্গেও এর সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। আরেক তত্ত্বে বলা হয়েছে, এটা রাশিয়ার মাফিয়া বা অসৎ রাজনীতিবিদদের অর্থও হতে পারে। তবে এ বিপুল অর্থের বিষয়টির মালিকানা দাবি করা এখন খুবই বিপজ্জনক। এর সঙ্গে থাকা কাগজপত্রে কোন প্রাপকের নাম উল্লেখ না থাকলেও এতে বলা হয়েছে এ অর্থের মালিক ৪৫ বছর বয়সী ফারজিন কারোরিয়ানমোটলাগ। পাসপোর্টে তথ্যে দেখা গেছে, তিনি ইরানের নাগরিক। তবে তিনিই যে আসল মালিক সে ব্যাপারে রাশিয়ার কাস্টম বা অন্যান্য সংস্থাগুলো নিশ্চিত নয়। তিনি নিজেও এ অর্থের মালিকানা দাবি করে মস্কো উপস্থিত হননি। সামপ্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওয়ার্ল্ড অব কাইন্ড পিপল নামক একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে এ অর্থ পাঠানো হয়েছে। এর সদর দপ্তর ইউক্রেন হলেও এ অর্থের চূড়ান্ত গন্তব্য লেখা হয়েছে রাশিয়া। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ৫৩ বছর বয়সী আলেকজান্দার শিপিলভও রাশিয়ান কর্তৃপতে এর মালিকানা দাবি করে তাদেরকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তার দাতব্য সংস্থা এ অর্থ উত্তোলন করে দিতে সহযোগিতা করতে আইনজীবীদেরকে দুই বিলিয়ন ইউরো দেয়ার প্রস্তাব করেছে। তবে মস্কোর আইনজীবীরা এ ব্যাপারে কোন আগ্রহই দেখাননি। কাস্টম বিশেষজ্ঞ ভাদিম লেয়ালিন বলেছেন, অর্থের প্রেরক সুনির্দিষ্টভাবে কোন প্রাপকের নাম উল্লেখ করেননি। বিষয়টি বেশ অস্বাভাবিক। এতেই মনে হচ্ছে এতে কোন ঘাপলা আছে।