বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ভারতের সারদা গ্রুপের অর্থে জামায়াতের মাধ্যমে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন অভিযোগে এবার পশ্চিবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ হাসানকে জড়িয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তার জের ধরেই শাসক দলের উপরে আরো চাপ বাড়াতে সক্রিয় বিরোধীরা। এ ঘটনায় ইমরানের পাশাপাশি কেউ দলের সভানেত্রী মমতাকে জেরা করার দাবি তুলছে। কেউ আবার তাকে গ্রেপ্তারেরও দিাবি জানিয়েছে।
রোববার ধর্মতলায় বাম যুব সংগঠনের এক সমাবেশে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘সিবিআই অবিলম্বে মূখ্যমন্ত্রী মমতাকে জেরা করুক। তাতে সহযোগিতা না করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হোক।’
ওইদিনই সকালে দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের এক কনভেনশনে সোমেন মিত্র, আবদুল মান্নান, মালা রায়, নির্বেদ রায়, দীপা দাশমুন্সিরাও মূখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি গদি ছাড়ারও দাবি তুলেছেন। এর পাশাপাশি রাজ্যের স্বাধীন ভারপ্রাপ্ত আইন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিধাননগরে সিবিআই দপ্তরের সামনে ধর্ণা দেয়ায় তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলাও করতে চলেছে কংগ্রেস।
আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত সিবিআই করছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। তাই কেউ সেই তদন্তে বাধা দিলে তা আদালত অবমাননারই সামিল হয়। সেই কারণেই আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি।’
বাম যুব সমাবেশে সূর্যকান্ত প্রশ্ন তোলেন, ‘দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে যদি বিভিন্ন মামলায় আগে সিবিআই দীর্ঘ জেরা করতে পারে, তাহলে সারদা মামলায় তারা কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে না?’
মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রির প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘ওর বই, ছবি কারা কিনেছে? সেই টাকা কোথায় গেল? অমুক জায়গায়, তমুক জায়গায় যে টাকা গেছে তা উদ্ধার করতে হবে। তাই আগে ওকে ধরা হোক, জেরা করা হোক। জেরার সময় যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে হেফাজতে নেয়া হোক। চার্জশিট দেয়া হোক। তারপর আমরা ওর পদত্যাগের দাবি করবো।’
তিনি বলেন, ‘শুধু চুনোপুঁটি নয়, রাঘব বোয়ালদের ধরতে হবে।’
সিপিএমের আরেক নেতা শ্যামল চক্রবর্তী হুমকি দিয়েছেন, ‘সারদাকাণ্ডের শেষ দেখে ছাড়বো আমরা।’
আশুতোষ কলেজের হলে কংগ্রেসের কনভেনশনে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ছিলেন লোকসভা ভোটে হেরে দীর্ঘদিন প্রায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা দীপা দাশমুন্সি। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যতদ্রুত সম্ভব পদত্যাগ করুন। অনেক উৎসব করেছেন। এবার বিদায় উৎসব করুন।’
এদিকে এক সভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেছেন, ‘আমি আবারও বলছি, সারদার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো যোগাযোগ ছিল না। আমাদের কেউ দোষী বা জড়িত প্রমাণিত হলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
তিনি মমতার সুরেই সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করে বলেন, ‘ওরা যখন সারদা গোষ্ঠীর বিজ্ঞাপন ছাপতো, তখন মনে ছিল না? সংবাদমাধ্যম এমন ভাব করছে, যেন সবাই সাধু, শুধু তৃণমূল চোর। সিবিআই নাকি গুরুঠাকুর।’
আজ সোমবারও সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে সিটু সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবে সিপিএম। তাতে দলের ছাত্র, যুব এবং মহিলা শাখা সংগঠনও অংশ নেবে। ২০ সেপ্টেম্ব শহীদ মিনার ময়দানে সমাবেশ ডেকেছে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস।