শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > মঞ্চ প্রস্তুত, খালেদার অপেক্ষায় নীলফামারীবাসী

মঞ্চ প্রস্তুত, খালেদার অপেক্ষায় নীলফামারীবাসী

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নীলফামারীতে আসছেন। তাই বানের পানির মতো ছুটে আসছেন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
বৃহস্পতিবার নীলফামারী শহরের বড় মাঠে ২০ দলীয় জোটের আয়োজিত জনসভায় বিএনপির চেয়ারপারসন জোটনেত্রী খালেদা জিয়া বক্তব্য দেবেন।
দেশব্যাপী গুম-খুন-নির্যাতন, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার, হয়রানি বন্ধ, ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে স্থানীয় ২০ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় বিকেল ৪টায় বক্তব্য শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু। ঘরষঢ়যধসধৎর-প–১ {ভড়পঁংথশবুড়িৎফ} মঞ্চ প্রস্তুত, খালেদার অপেক্ষায় নীলফামারীবাসী ঘরষঢ়যধসধৎর প ১
বেগম জিয়ার সভাস্থলের মঞ্চ বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করা হয়। মাঠে এবং মাঠের বাহিরের শহর জুড়ে লাগানো হয়েছে ২২৫টি মাইক। আর প্রিয় নেত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে বানের পানির মতো ছুটে আসছে বিএনপি ও জোট নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, ভোর থেকেই নীলফামারীর বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার নারী-পুরুষ জনসভাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন।
নীলফামারী বড় মাঠে ১৪ বছর আগে অর্থাৎ ২০০০ সালের ২০ জুলাই খালেদা জিয়া চার দলীয় জোটের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিয়েছিলেন। তবে তার মাঝে বেগম জিয়া সর্বশেষ নীলফামারী এসেছিলেন ২০০৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সেসময় তিনি ৪ দলীয় জোটের পক্ষে ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় জেলা শহরের শহীদ মিনার চত্বরে পথসভা এবং জেলার ডোমার উপজেলা বাজার চত্বরে বক্তব্য দিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে নীলফামারীর ৪ আসনেই বিএনপি তথা চার দলীয় জোটের প্রার্থীদের ভরাডুবি ঘটেছিল।
দীর্ঘদিন পর খালেদা জিয়ার নীলফামারী আগমন ঘিরে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীরা যেন উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। এছাড়া নীলফামারীতে খালেদা জিয়াকে বরণে এবং জনসভায় যোগ দিতে ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন দলের কেন্দ্রিয় নেতারা ঢাকা থেকে বুধবার রাতেই নীলফামারীতে এসে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে, সভামঞ্চ ও এর আশপাশের এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে অবস্থান করছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর (সিএসএফ) চৌকস একটি দল। এছাড়া পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে গোটা জেলা শহর জুড়ে। স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি রংপুর থেকে নীলফামারী নিয়ে আসা হয়েছে পুলিশের অতিরিক্ত আর আর এফ (রেঞ্জ রির্জাভ ফোর্স)। বেগম জিয়ার জনসভা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন থেকে পুলিশ প্রশাসন সকল প্রকার সহযোগিতা করছেন বলে জানান বিএনপির কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
অপরদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, নীলফামারীর এই জনসভা থেকে অবৈধ সরকারের পতনের ডাক দিতে পারেন আমাদের জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
এ প্রসঙ্গে ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, গত ৫ জানুয়ারির অবৈধ নির্বাচনকে প্রতিহত করতে গিয়ে নীলফামারীতে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের অসংখ্য নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তাই বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবি নিয়ে অবৈধ সরকার পতনের আন্দোলন নীলফামারীর জনসভা থেকে শুরু করা হবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. আনিসুল আরেফিন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সামছুজ্জামান জামান প্রমুখ। তবে এ সময় সভাস্থলে দেখা পাওয়া যায়নি ২০ দলের শরীক অপর কোনো দলের নেতাকর্মীদের।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে সড়ক পথে নীলফামারীর উদ্দেশে ঢাকাস্থ নিজের গুলশানের বাসভবন ছাড়েন খালেদা জিয়া। বগুড়া জেলা সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন শেষে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নীলফামারীর উদ্দেশে বগুড়া ছাড়বেন তিনি। বগুড়া থেকে রংপুরে হয়ে নীলফামারী জেলা সার্কিট হাউসে পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া। সেখানে দুপুরের খাবার গ্রহণ ও বিশ্রাম শেষে বিকেল ৪টায় ২০ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন।
বুধবার বিকেলে খালেদা জিয়া নীলফামারীর উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তার গুলশানের বাসা ও রাজনৈতিক কার্যালয় এলাকা আগেকার সফরগুলোর মতো কোনো প্রাণচাঞ্চল্য ছিল না বলে সেখানকার সূত্র জানায়।

ওই সূত্র আরও জানায়, গুলশানের বেগম জিয়ার বাসার সামনে দেখা যায়নি নেতাকর্মীদের পদচারণা। রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে দেখা যায় কেবল তার সঙ্গে সফরে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের বহনকারী ৪/৫টি গাড়ি। আর গুলশানের বাসার সামনে দেখা মিলেছে খালেদার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ৩/৪টি গাড়ি। বিস্ময়ের ব্যাপার ছিল, খালেদা জিয়ার সফরের আগে নেতাকর্মীদের গাড়ি বহরের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের ঢল নামতো, অথচ এখন নেতাকর্মীদেরই কোনো ভিড় নেই। আগেকার সফরগুলোতে চেয়ারপারসনকে বিদায় জানাতে রাজধানীসহ ঢাকার আশপাশ থেকে গুলশান কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হলেও বুধবার একেবারেই দৃষ্টিকটু লেগেছে নেতাকর্মী শূন্যতা। নেতা বলতে গুলশান কার্যালয়ের সামনে ছিলেন কেবল চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।
কী কারণে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় হঠাৎ এমন নিষ্প্রাণ হয়ে উঠলো এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানা না গেলেও ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ মতানৈক্যই দায়ী বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে, খালেদা জিয়ার নীলফামারী আগমনের চিত্রতা ভিন্নমাত্রায় রূপ নিয়েছে। সৈয়দপুর থেকে নীলফামারী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার জুড়ে এবং বিভিন্ন স্থানে ৭ শতাধিক তোরণ স্থাপন এবং জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিপুল সংখ্যক প্যানা ব্যানার লাগানো হয়েছে। নেত্রীর আগমনকে ঘিরে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গণসংযোগ ও দফায় দফায় সভা-সমাবেশ করেছে।