শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > মঙ্গলে প্রবহমান পানির সন্ধান

মঙ্গলে প্রবহমান পানির সন্ধান

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

মঙ্গল গ্রহে পানির অস্তিত্ব অনেক দিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে তা ছিল তাদের নিছক অনুমান, হাতে কোনো প্রমাণ ছিল না। কিন্তু ক্যামেরায় ধারণ করা যে ছবি প্রকাশ করেছে নাসা, এরপর মঙ্গলে পানির অস্তিত্ব কষ্টকল্পনা বলে আর অন্তত উড়িয়ে দেয়া যায় না।
সোমবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকরা বলেছেন, সৌর পরিবারের লাল গ্রহটির উপরিভাগে গ্রীষ্মের মাসগুলোতে পানির প্রবাহের চিহ্ন পেয়েছেন তারা।
ওয়াশিংটনে সংবাদ সম্মেলনে নাসার প্ল্যানেটারি সায়েন্স বিভাগের পরিচালক জিম গ্রিন ঘোষণা দেন, বিশেষ পরিবেশে তরল পানির সন্ধান মিলেছে মঙ্গলে। এ পানির উৎস কি কিংবা এর রসায়ন সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা বিজ্ঞানীরা এখনও পাননি। তবে তারা বলছেন, সৌরমণ্ডলে পরিবেশের দিক থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজার ক্ষেত্রে চিন্তার নতুন খোরাক দেবে এ প্রমাণ।
নাসার সহকারী প্রশাসক জন গ্রুনসফেল্ড বলেন, মঙ্গলে আমরা পানিকে অনুসরণ করছিলাম, পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধানে আমাদের যে অনুসন্ধান এটা তারই অংশ। এখন আমরা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নিয়ে বলতে পারি, আমরা যা ভেবেছিলাম, তাই পাচ্ছি। এখন প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, মঙ্গলে প্রবহমান পানি আছে এবং তা এ সময়েই।
নাসার কৃত্রিম উপগ্রহ মঙ্গলের রেকারিং স্লোপ লিনেই এর উপরের স্তরের যে ছবি পাঠিয়েছে, তা জমাট লবণের। এ লবণ মঙ্গলের হালকা বাতাসে থাকা পানির বরফ হওয়া কিংবা বাষ্পে পরিবর্তিত হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে একে তরল আকারে প্রবাহিত করতে পারে।
মঙ্গলের পৃষ্ঠে গাছের ছড়ানো শিকড়ের মতো কতগুলো রেখার বিন্যাসই রেকারিং স্লোপ লিনেই (আরএসএল) বা পুনরাবৃত্ত ঢাল রেখা, যার কারণে গ্রহটিতে পানি রয়েছে বলে ধারণা করা হতো।
২০১১ সালে প্রথম নাসার উপগ্রহ চিত্রে মঙ্গলে আরএসএল ধরা পড়ে, যা গ্রীষ্মকালে দেখা যায়, কিন্তু তাপমাত্রা কমলে মিলিয়ে যেতে শুরু করে। তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রির ওপরে থাকলেও তা দেখা যায়।
মহাকাশযান মার্স রেজোন্যান্স অরবিটারের পাঠানো মঙ্গলের কেমিক্যাল ম্যাপ বিশ্লেষণে নতুন একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা দেখেছেন, মঙ্গলপৃষ্ঠে বিষুবীয় অঞ্চলের কয়েক স্থানে আরএসএলে ওই লবণ জমে একমাত্র পানির উপস্থিতিতে।
মার্স রেজোন্যান্স অরবিটারের পাঠানো আরএসএলের ছবি থেকে ছোট শিরাগুলোর ভেতরের ছবি স্পষ্ট ছিল না। তার স্পষ্ট করে দেখতে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করেন জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির পিএইডি ছাত্র লুজেন্ড্রা ওজাহেচাই ও তার সহযোগীরা।
ওজাহেচাই বলেন, আমরা বলছি না যে আমরা মঙ্গলে প্রবহমান পানি পেয়েছি, আমরা দ্রবীভূত লবণ পেয়েছি। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী, মঙ্গলের নদীর পানি মিষ্টি নয়, লোনা। তাদের বিশ্বাস, লোনা পানিতে আণুবিক্ষণিক জীব থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এ ঘটনায় ফের পুরনো প্রশ্নটাই নতুন করে সামনে উঠে এলো। মঙ্গলে কি কখনও প্রাণ ছিল? বা এখনও আছে?