বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
নড়াইল: সদ্যপ্রাপ্ত নতুন বইয়ের গন্ধে মাতোয়ারা যখন স্কুলের আঙিনা। ঠিক তখনি হঠাৎ ভূমিকম্পে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে দেখা দিয়েছে ফাটল। তাই ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ বর্জন করে আতঙ্কগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা মাঠেই চলছে পাঠদান।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পূর্বদিকে প্রায় ৪০ কি.মি. দূরত্বে চরাঞ্চলের দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে স্থাপিত হয়। পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলা সীমারেখার চতুর্দিকে নদীবেস্টিত হওয়ায় বিচ্ছিন্ন এ জনপদ অনেকাংশেই অবহেলিত। তারপর গত ৪ জানুয়ারির ভূমিকম্পে এ জনপদের একমাত্র ৮৮নং চরপাচাইল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ধসের ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। খসে পড়ছে দেয়ালের প্লাস্টার ও পলেস্তারা। বিমের রডগুলোও মরিচা ধরে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এ অবস্থায় পাঠদানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ বর্জন করে আতঙ্কগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধান শিক্ষক ও অত্র বিদ্যালয়ের এসএমসি।
১৯৯৮ সালে মশিউর রহমান (বাবু) নামে এক ব্যক্তির ঠিকাদারিত্বে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণ করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী হওয়ায় সামান্য ভূমিকম্পের ঘটনায় ভবনের এমন অবস্থা হয়েছে। যা নড়াইলসহ অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ধসের ঘটনা শোনা যায়নি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি তদন্তের দাবিও জানান অভিভাবরা।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক আবুতাহের লস্কর, এসএমসি সভাপতি ফরিদ আলী খান এবং জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য মো. ফায়েক আলী খান বলেন, হঠাৎ ভূমিকম্পে বিদ্যালয়ের বর্তমানে যে অবস্থা তাতে এর মধ্যে কোনোভাবেই ক্লাস করা সম্ভব নয়। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত সংস্কারের দাবিও জানান তারা।
অভিভাবক লিপন খান জানান, নিম্নমানের নির্মাণ সমগ্রী হওয়ায় সামান্য ভূমিকম্পে স্কুলের ভবনটি এভাবে ধসে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় সামান্য ভূমিকম্পেই ভবনটির এ দুরবস্থা। অচিরেই ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় ভবনের অবস্থা তদন্ত করে দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।
খোলা আকাশের নিচে রোদ আর ধুলাবালিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোমলমতি শিশু-শিক্ষার্থীদের এ দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। অচিরেই এই দুর্ভোগ নিরসনের দাবি শিক্ষার্থীদের।
স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মিথিলা খানম, নিরব এবং ৫ম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ জানায়, সকালে স্কুলে এসে ভবনে ধস দেখে তারা ঘাবড়ে যায়। পরে শিক্ষকরা এসে অবস্থা দেখে আমাদের নিয়ে খোলা মাঠে ক্লাস নিচ্ছেন।
ওই বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষককে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘দ্রুত বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ বাংলামেইল২৪ডটকম