বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: তুরস্ককে ভিসামুক্ত ইউরোপ ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউরিয়ন সংক্ষেপে ইইউ। মার্চে আঙ্কারার সঙ্গে স্বাক্ষরিত অভিবাসন চুক্তির শর্তানুযায়ী তারা দেশটিকে এ সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। তবে এর আগে সংস্থাটির দেয় বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে তুরস্ককে।
বিবিসি বলছে, বুধবার ইউরোপীয় কমিশন তুরস্কের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণের পক্ষে সুপারিশ করবে। ওই সুপারিশ গৃহীত হলে তুর্কি নাগরিকরা ইউরোপের স্কেনজেন এলাকায় ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবে। তবে এই সুবিধা পাওয়ার আগে তুরস্ককে ইইউ নেতাদের দেয়া বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন: বাক স্বাধীনতা ও বিচারের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা। এসব শর্ত পূরণ করা হলেই কেবল ইউরোপে ভিসা ছাড়া সীমিত সময়ের জন্য ভ্রমণের সুবিধা পাবে আঙ্কারা। এ নিয়ে বুধবার ইইউ’র সঙ্গে বৈঠকে বসছেন তুর্কি নেতারা। সেখানে তারা এ বিষয়গুলোকে কীভাবে সামাল দেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।
ওই বৈঠকে ভিসামুক্ত ভ্রমণ অনুমোনের পর এ প্রস্তাবটি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং এর সদস্য দেশগুলো কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। তবে ইইউ’র আশঙ্কা তুরস্ককে ভিসামুক্ত ইউরোপ ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হলে শরণার্থীদের আর নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে দেশবাসীর ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। প্রতিদিন তুরস্ক ও উত্তর আফ্রিকা থেকে প্রচুর পরিমাণ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশ করছে। শরণার্থীদের এই স্রোতকে রুখতে গত মার্চ মাসে তুরস্কের সঙ্গে ওই চুক্তি করেছিল ইইউ।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, গত ২০ মার্চের পর থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে প্রবেশ করা সব শরণার্থীকে ( যাদের মধ্যে সিরীয়রাও রয়েছে) ফেরত নেওয়ার কথা রয়েছে আঙ্কারার। বিনিময়ে ইইউ তুরস্ক থেকে সরাসরি কয়েক হাজার সিরীয় শরণার্থীকে ইউরোপে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। ওই চুক্তিতে তুরস্ককে আরো অর্থ সহায়তা, দ্রুত ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ এবং ইইউ-র সদস্য পদ দেওয়ার মত বিষয়গুলো উল্লেখ ছিল।
স্কেনজেন এরিয়া কি?
১৯৯৫ সালে অবাধ ও মুক্ত চলাচলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৬টি দেশ মিলে গঠন করে স্কেনজেন এরিয়া। ওই অঞ্চলে সীমান্তের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু বিমানে ওই সব দেশের যাত্রীদের পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। বিড়ম্বনা এড়াতে এখনো তারা সঙ্গে রাখেন বিভিন্ন কাগজপত্র। কেউ কেউ পাসপোর্টও রাখেন। পশ্চিম আফ্রিকার অর্থনৈতিক জোট- ইসিডব্লিউএএস, কোঅপারেশন কাউন্সিল ফর দ্য আরাব স্টেটস অব দ্য গালফ এবং মারকোসুর ইন সাউথ আমেরিকা’সহ কিছু আঞ্চলিক সংস্থা আছে, যাদের সদস্য দেশগুলোতে নিজেদের সফরের জন্য পাসপোর্টের পরিবর্তে জাতীয় পরিচয়পত্রই গ্রহণযোগ্য। তবে এক্ষেত্রে বিশ্বে একমাত্র ব্যতিক্রম ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের পাসপোর্ট রাণীর নামে ইস্যু করা হয়। তাই তার নিজের কোনো পাসপোর্ট নেই। কোনো দেশ সফর করতে তার পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন হয় না।