শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ভিকারুননিসায় কোটি টাকার কেলেঙ্কারি,অধ্যক্ষের অস্বীকার

ভিকারুননিসায় কোটি টাকার কেলেঙ্কারি,অধ্যক্ষের অস্বীকার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ দেশসেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র একটি খাতেই গত দুই শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দেড় কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। একই সময়ে কেনাকাটা, অনুষ্ঠানের নামে ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে অর্থ উত্তোলন, শিক্ষকদের অতিরিক্ত বেতন ভাতা ও ইনক্রিমেন্ট প্রদান, দু’বার অবসর ভাতা প্রদানসহ কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ভিকারুননিসায় কোটি টাকা নয়ছয়

এর মধ্যে কেনাকাটায় অনিয়ম হয়েছে ৩৪ লাখ ৮১ হাজার ১২৬ টাকার। ১৬ হাজার ছাত্রীর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো ‘ক্যাশ বই’ নেই। ছাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া টাকার কোনো ‘আদায় রেজিস্টার’ও নেই। ফলে আর্থিক হিসাব-নিকাশে ন্যূনতম স্বচ্ছতা নেই।

ভর্তি ফরমই কেনেনি এমন ছাত্রীও অনায়াসে ভর্তি হয়েছে। অবসরে যাওয়ার পরও এক বছর ধরে এক শিক্ষকের বেতন প্রদান করা হয়েছে বলে ‘কাগজপত্রে’ দেখানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ‘হাতে নগদ’ রাখলেও তার খরচের হিসাব নেই।

২০ মাসে তিনি ৫৪ লাখ ৮৬ হাজার ১১০ টাকা হাতে নগদ রাখেন। নয়জন শিক্ষক-কর্মচারী বিধিবহির্ভূতভাবে প্রায় ৬২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা অবসর ভাতা গ্রহণ করেছেন।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) সরেজমিন তদন্তে এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। ডিআইএর উপপরিচালক দেবদুলাল ভট্টাচার্য, পরিদর্শক বিপুল চন্দ্র সরকার, সহকারী পরিদর্শক আতাউল হক খান চৌধুরী, সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক দাউদ হোসেন, অডিট অফিসার মোকলেছুর রহমান ও ফরিদ উদ্দিন ২০১৩ সালের ১৭ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি, ৬ ও ১৮ জুলাই এবং ১৮ ও ২২ আগস্ট ওই পরিদর্শন করেন।

চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ওই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে ভিকারুননিসায় অর্থ লোপাটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ বলেছেন, তদন্তের সব তথ্য সঠিক নয়।

আর্থিক অনিয়ম :তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১০-১১ অর্থবছরে আর্থিক হিসাব-নিকাশ সমাপ্তির জের ছিল ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৩ টাকা ৬২ পয়সা। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা প্রারম্ভিক জের (মূলধন) হওয়ার কথা। কিন্তু মোট টাকা থেকে এক কোটি ৪৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৫ টাকার কোনো হদিস নেই।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভর্তির জন্য লটারি হয়। লটারির জন্য তারিখবিহীন ৭৬১ নম্বর ভাউচারে এক লাখ ৮৮ হাজার ১৩৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। কোনো ভর্তি পরীক্ষা হয়নি। কিন্তু ১৪২৭ নম্বর ভাউচার ও ১৫৩১ থেকে ১৫৩৮ নম্বর ভাউচারের মাধ্যমে সব শিক্ষক-কর্মচারীর নামে ভর্তি পরীক্ষার সম্মানী বাবদ ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৬২৫ টাকা বিতরণ করা হয়। তদন্তে এ অনিয়ম ধরা পড়ে।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, ভিকারুননিসায় খাতওয়ারি আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব সংরক্ষণ করা হয় না। ফলে ভর্তি, বেতন, উন্নয়নসহ প্রভৃতি খাতে বার্ষিক কত টাকা আয় হয়েছে, তা নির্ধারণ করা অসম্ভব। এমনকি অর্থ আদায়ের রেজিস্টার পর্যন্ত রাখা হয় না।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটিতে এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিওভুক্ত ৩৭ জন সহকারী অধ্যাপক-প্রভাষক কর্মরত থাকায় আনুপাতিক হারে ১০ জন সহকারী অধ্যাপকের স্কেলে বেতন পেতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে সরকারি বেতনে প্রাপ্য পাঁচজন এবং প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বেতনে ২৩ জন সহকারী অধ্যাপকের স্কেলে বেতন গ্রহণ করছেন। ১৮ জন শিক্ষকই সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত স্কেলে বেতনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন।

ভিকারুননিসায় মঞ্জুরি করা এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। গত বছরের (২০১৩) জুলাই মাসের বেতন বিল যাচাই করে দেখা যায়, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসরকারি তহবিল থেকে বেতন ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্কেলের সর্বোচ্চ ধাপ অতিক্রম করার পরও বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছার পর এ ধরনের ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার কোনো বিধান নেই।

প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায়ও অনিয়ম ধরা পড়ে। ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি মেসার্স আর বি ট্রেডার্সের কাছ থেকে ৪০ জোড়া বেঞ্চ গ্রহণ করলেও ৫৮ জোড়ার বিল দেখানো হয়েছে। অতিরিক্ত ১৮ জোড়ার জন্য ৬২ হাজার ৬৪ টাকা অতিরিক্ত বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছে।

২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্টিং কাজের বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ভ্যাট কেটে না রাখায় সরকার এক লাখ পাঁচ হাজার ৮৪৬ টাকা ২২ পয়সা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান না করে ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৩ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এতে আর্থিক বিধি লঙ্ঘিত হয়েছে।

সরকারি ক্রয় নীতিমালা ‘পিপিআর ২০০৮’ ও ‘পিপিআর ২০১০’ অনুসারে দুই লাখ টাকার বেশি কোনো কেনাকাটা করতে হলে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের বিধান থাকলেও ভিকারুননিসায় ২০১২ সালের ৮ মে সিল্কওয়েজ মিডিয়া থেকে ছয় লাখ ৫৬ হাজার ৭৭০ টাকা, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ সেমিকো মেটালিক থেকে দুই লাখ দুই হাজার টাকা এবং ২০১২ সালের ৩ মার্চ সুইফট প্রিন্টার্স থেকে দুই লাখ পাঁচ হাজার ৯২৩ টাকা এবং একই বছরের ১৪ জুলাই মেসার্স চৌধুরী ড্রেস হাউস থেকে ছয় লাখ ৭৫ হাজার ৮৭০ টাকার কাগজ কেনা হয় কোনো দরপত্র ছাড়াই।

তদন্তকালে দেখা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (ঢাকা) আদেশ (এসআরও নম্বর ৯৯, আইন-২০০৯) অনুযায়ী, গভর্নিংবডির অনুমোদনক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা হাতে নগদ রাখতে পারেন। কিন্তু এ বিধি লঙ্ঘন করে অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা বেগম প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ‘হাতে নগদ’ রাখা হয়েছে বলে দেখিয়েছেন। অথচ পরবর্তী মাসের হিসাবের সঙ্গে তা সমন্বয় না করে নতুন করে আবারও টাকা তুলে ‘হাতে নগদ’ রেখেছেন। এসব টাকা কী কাজে, কোথায় ব্যয় করা হয়েছে তার কোনো হদিস নেই। সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে অধ্যক্ষের এই কাজকে ‘অর্থ আত্মসাতের শামিল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ টাকার পরিমাণ ৫৪ লাখ ৮৬ হাজার ১১০ টাকা।

২০১৩ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী ও কৃতী ছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাবদ চার লাখ ৫২ হাজার ৮০০ টাকা ব্যয় হয়। অথচ টেন্ডার নোটিশের সময় দেওয়া হয় মাত্র একদিন। মাত্র একদিনের সময়ে কোটেশন আহ্বান করে এ ধরনের ব্যয় গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

তদন্তে বলা হয়েছে, ভিকারুননিসার মতো পুরনো ও খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলামনার ক্যাশ বই রাখা হয় না। প্রতিষ্ঠানে টাকা আদায়ের কোনো রেজিস্টার নেই। ছাত্রীরা সরাসরি ব্যাংকে টাকা জমা দেয়। ছাত্রীরা প্রকৃতপক্ষে কত টাকা ব্যাংকে জমা দেয়, তা যাচাইয়ের কোনো রেজিস্টার নেই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যে হিসাব দেয়, তা-ই প্রতিষ্ঠানটি মেনে নেয়। এ ক্ষেত্রে টাকা আত্মসাতের ‘বিরাট সুযোগ’ থেকে যায়।

জানা গেছে, দুটি এফডিআরে ভিকারুননিসার সংরক্ষিত তহবিল রয়েছে চার কোটি ৮৭ লাখ ৭৫১ টাকার। সাধারণ তহবিল হিসেবে ১৭টি এফডিআরে আছে আরও ১২ কোটি ৯৭ লাখ ৮২ হাজার ৩৬৭ টাকা। এর বাইরেও বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৬টি হিসাবে আরও ১৫ কোটি ২৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৬ টাকা রয়েছে। তদন্ত কমিটি বলেছে, ভিন্ন ভিন্ন তহবিলের নামে একাধিক ব্যাংকে আরও চার কোটি ৭২ লাখ ১৯ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা জমা আছে। হিসাবের স্বচ্ছতার জন্য যথাসম্ভব ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা সীমিত রাখা উচিত।

এসব আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা বেগম সমকালকে বলেন, ‘৪০ জোড়া বেঞ্চ কিনে ৫৮ জোড়ার বিল দেওয়ার তথ্য একেবারেই ঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানের তিনটি শাখায় ৫৮ জোড়া করে দু’বার ও ৪০ জোড়ার বেঞ্চ এক দফায় কেনা হয়েছে। ডিআইএর প্রতিবেদনে আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা কেন ৪০ জোড়া কিনে ৫৮ জোড়ার বিল দেব?’ তিনি বলেন, ‘হাতে নগদ টাকা বেশি রাখা অপরাধ নয়। যেসব প্রতিষ্ঠানের একটি শাখা, তাদের অধ্যক্ষ পাঁচ হাজার টাকা রাখতে পারেন। কিন্তু ভিকারুননিসা ১০টি শাখার সমান একটি প্রতিষ্ঠান। তাই বেশি টাকা হাতে রাখা হয়।’ হাতে থাকা টাকা কোথায়, কীভাবে খরচ হয়েছে তার সব হিসাব ও কাগজ হাতে আছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় শর্ট নোটিশে বড় অনুষ্ঠান করতে হয়। টেন্ডার আহ্বান করে অনুষ্ঠান করার সময় কোথায় পাব?’

দু’বার অবসর ভাতা গ্রহণ :শিক্ষকদের অবসর ভাতা গ্রহণের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সরকারি বিধি অনুসারে, বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর ভাতা দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে এমপিও থেকে টাকা কেটে রেখে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিলে জমা করা হয়। কিন্তু ভিকারুননিসায় তা করা হয় না। অথচ এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অবসরে গেলে নিজ প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে অবসর ভাতা গ্রহণ করেন।

আবার একই সঙ্গে তারা অবসর সুবিধা বোর্ড থেকেও ‘অবসর ভাতা’ এবং কল্যাণ তহবিল থেকে ‘কল্যাণ ভাতা’ গ্রহণ করেছেন। তারা একই সঙ্গে অনৈতিকভাবে দুটি সুবিধাই নিয়েছেন। ২০১২-১৩ অর্থবছরে নয়জন শিক্ষক ৬২ লাখ ৭৯ হাজার ৯২ টাকা অতিরিক্ত সুবিধা নিয়েছেন। এমন কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা বেগম (২১ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০), সহকারী শিক্ষক মেহেরুন্নেছা (নয় লাখ ৬২ হাজার ৫৮১), সহকারী শিক্ষক বিলকিস খানম (চার লাখ ৫৩ হাজার ৮৯৪), নৈশপ্রহরী আবদুল হামিদ (দুই লাখ ৯৯ হাজার ১৩৬), সহকারী শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ (১২ লাখ ৭২ হাজার ৯৬০), শারমিন জাহান (এক লাখ ৯২ হাজার ১১৩), সহকারী শিক্ষক আফরোজা আখতার (সাত লাখ ৭৪ হাজার ২৮৯), মো. আজগর (এক লাখ ৬১ হাজার ১২৫) ও আশরাফুল ইসলাম (এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৯৪ টাকা)।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা বেগম সমকালকে বলেন, অবসরের টাকা সঠিকভাবেই শিক্ষকরা নিয়েছেন। তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে।

বেতন-ভাতায় অনিয়ম :দেখা গেছে, সহকারী অধ্যাপক (জীব) মিন্নাতুল মহল ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল অবসর নেন। অথচ তার নামে ২০১৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অতিরিক্ত আট লাখ ৪৩ হাজার ৮১৮ টাকা বেতন-ভাতা পরিশোধ দেখানো হয়েছে। তদন্ত কমিটি এ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে। প্রভাষক (ইংরেজি) জান্নাতুল ফেরদৌসী, সহকারী প্রধান শিক্ষক আসফিয়া সুলতানা, সহকারী শিক্ষক জাহান আরা শিরীন আফরোজা, প্রভাষক (অর্থনীতি) শায়লা নার্গিস, প্রদর্শক আমাতুন নূরসহ কয়েকজনকে অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা ও ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এ পরিমাণ প্রায় ১৭ লাখ টাকা। কাউকে কাউকে প্রাপ্য হওয়ার আগেই উচ্চতর স্কেল দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটি অতিরিক্ত প্রদেয় টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলেছে। অধ্যক্ষ তদন্ত প্রতিবেদনের এই তথ্যও অস্বীকার করেন। তিনি সমকালকে জানান, কোনো শিক্ষককে বেশি টাকা বেতন-ভাতা দেওয়া হয়নি।

অধ্যক্ষের আরও বক্তব্য: ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা বেগম সমকালকে বলেন, ডিআইএ যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে সব তথ্য সঠিক নেই। তারা এ প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জ করে জবাব তৈরি করছেন। শিগগিরই তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেবেন।

তদন্ত কমিটির বক্তব্য: কমিটির প্রধান দেবদুলাল ভট্টাচার্য সমকালকে বলেন, নানা বাস্তব প্রতিকূলতার মধ্যে তারা ভিকারুননিসার তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। কিছু কিছু অনিয়মের মাত্রা দেখে তারা রীতিমতো বিস্মিত। তিনি মনে করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায় থেকে শক্তিশালী কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করা হলে আরও অনেক অনিয়ম বেরিয়ে আসবে।সমকাল