বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক বরাবরই একটি আলোচনার বিষয়বস্তু। রাজনৈতিক মহলে এ সম্পর্ক ভাবনার ও আলোচনার খোরাক জোগায়।
নির্বাচন সামনে এলে এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেয়। প্রতিবেশী পরম শক্তিধর দেশটির সঙ্গে দেশের অন্যতম বৃহৎ দলটির সম্পর্ক একটা সময় সাপে নেইলে ছিল।
ভারত বিরোধিতা বিএনপির রাজনীতির একটি অধ্যায় বলা চলে। দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখনও মনে করে-ভারত কখনই বিএনপিকে এ দেশের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
তবে বিএনপির উদারপন্থী মহল বরাবরই এ ধারণার বিপরীতে। তারা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়েছে গত কয়েক বছর।
এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই জোটটির নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানহীন বেসামাল বিএনপিকে ভোটের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন ড. কামাল হোসেনই। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে আস্থা রেখে বিএনপি আজ নির্বাচনে।
তাই জোটের প্রধান শরিক বিএনপির কূটনীতি নিয়েও ড. কামালকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।
বুধবার ভারতের জাতীয় দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া সাক্ষাতকারে তাকে এ প্রশ্ন করা হয়।
ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের বিষয়ে ড. কামাল বলেন, ‘ভারতকে বিএনপি বলেছে-তারা ভুল ছিল। খালেদা জিয়া যখন ভারত গেলেন, তখন তিনি তাদের এটি বলেছেন। এটি তাদের ভুল উপলব্ধির প্রক্রিয়ার অংশ, খালেদা জিয়া নিজেদের অবস্থান সংশোধন শুরু করেছেন।’
ড. কামালকে আরও প্রশ্ন করা হয়-যদি বিএনপি জোট একাদশ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, তবে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী?
জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি-হ্যাঁ বা না বলব না। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোনো পদ ও বেতন ছাড়াই কাজ করতে আগ্রহী।
নির্বাচনের বিষয়ে কামাল হোসেন বলেন, আমি ভোটের দিনের অপেক্ষায় আছি। ভোটের দিন একটি স্বাধীনতার দিন। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা হলে তা হবে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিন। এখন গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা হলে স্বাধীনতা অর্থপূর্ণ হবে।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতা বিএনপির প্রতীকে নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, দুঃখের সঙ্গে আমাকে বলতে হচ্ছে-জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন দেয়াটা বোকামি।
আমি লিখিত দিয়েছি-জামায়াতকে কোনো সমর্থন দেয়া এবং ধর্ম, মৌলবাদ, চরমপন্থাকে সামনে আনা যাবে না। তিনি আরও বলেন, যদি জানতাম জামায়াত নেতারা বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবেন, তা হলে আমি এতে যোগ দিতাম না। কিন্তু ভবিষ্যৎ সরকারে যদি জামায়াত নেতাদের কোনো ভূমিকা থাকে, তা হলে আমি তাদের সঙ্গে একদিনও থাকব না।