বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: আল কায়েদা ভারতে লোক নিয়োগ শুরু করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এমনই সন্দেহ করছে। সে কারণেই জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে নতুন করে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে এনআইএ।
বুধবার কলকাতার প্রথমসারির বাংলা দৈনিক বর্তমান এ খবর প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, একদিকে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের ২০ জন পলাতক মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে এনআইএ। সেই তালিকায় রিয়াজ ভাটকল থেকে শুরু করে কলকাতার আমির রেজা শাহি সকলেই আছেন। এর পাশাপাশি আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরির জেহাদের ভিডিও ফুটেজ আসল না নকল তা নিয়ে পৃথক তদন্ত চললেও, আল কায়েদা নিয়ে আলাদা ফাইল খুলতে আগ্রহী এনআইএ। এই মনোভাব জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আল কায়েদার ব্যাপারে অগ্রসর হওয়ার অনুমতি চেয়েছে তারা।
সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বর্তমান জানায়, ইতিমধ্যেই খবর পাওয়া যাচ্ছে, আল কায়েদার ওই খবর মোটেই ফাঁকা আওয়াজ নয়। কারণ কাশ্মীর, উত্তর পূর্ব ভারত, কর্ণাটক এবং উত্তর প্রদেশে ইতিমধ্যেই আল কায়েদার পক্ষ থেকে গোপনে নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে খবর পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
প্রতিবেদনটিতে আরো জানানো হয়, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টিটিপি এবং পাঞ্জাবি তালিবান গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে আল কায়েদার ইউনিট খুলে নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে লস্কর-ই-তৈয়বাকে। আল কায়েদার পক্ষ থেকে ‘ঘাজওয়া ই হিন্দ (ভারতের যুদ্ধ) স্লোগান সম্বলিত একটি পরিকল্পনা নিয়ে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনগুলোকে পাঠিয়েছে। তেহরিক-ই-পাকিস্তানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মীরে এসে নবনিযুক্ত ভারতীয় আল কায়েদা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা করতে। উত্তর পূর্ব ভারতকে রিক্রুটমেন্টের একটি বিশেষ কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে আল কায়েদা।
এতে দাবি করা হয়, শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশ ভারত এবং মায়ানমার সংলগ্ন উপমহাদেশীয় অংশকেই আল কায়েদা সামগ্রিক জেহাদের ভরকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে। আরো বলা হয়, ইতিমধ্যেই ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ায় (আইএসআইএস) ভারতের মুম্বইয়ের বেশ কিছু যুবক যোগ দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, আইএসআইএস-এর সঙ্গে আল কায়েদার রীতিমতো জেহাদের অধিকার ও এলাকার দখলদারিত্ব নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে। আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরি ভারতের ইউনিটের দায়িত্ব দিয়েছেন আসিফ উমর নামের এক কমান্ডারকে। এবং ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভরসা আল কায়েদার। সিমি এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের কর্ণাটক, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের মডিউল এখন নিষ্ক্রিয় থাকলেও সক্রিয়তা যে বন্ধ হয়নি সে ব্যাপারে নিশ্চিত গোয়েন্দারা।
তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এখনও প্রকাশ্যে আল কায়েদার বিপদ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইছে না। বরং এখনো আল কায়েদার হুমকি নিয়ে শংসয় জিইয়ে রেখেছে। কিন্তু আদতে ভেতরে ভেতরে যে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং তথ্য সংগ্রহে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তা স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, ঠিক এই বিপদের কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় দেশের জেড প্লাস ভিভিআইপিদের একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলেছে, যারাই যে কোনো প্রয়োজনে বিদেশে যাবেন, তারাই যেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে অবগত করেন। হঠাৎ কেন এই নির্দেশিকা তা নিয়েও জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে।