স্টাফ রিপোর্টার ॥
দিন দিন আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়ছে ভারতে। ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে আত্মহত্যার প্রবণতা ৩.৪ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময় গোটা দেশে নথিভুক্ত আত্মহত্যার সংখ্যা এক লাখ ৩৯ হাজার ১২৩। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৩৮১ জন আত্মহত্যা করেছেন ২০১৯ সালে। আর আত্মঘাতীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই পুরুষ।
এনসিআরবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে নথিভুক্ত আত্মঘাতীর সংখ্যা এক লাখ ৩৪ হাজার ৫১৬ জন। এ বছরের তুলনায় ২০১৯ সালে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে ৩.৪ শতাংশ। তার আগের বছর ২০১৭ সালে আত্মহত্যা করেন এক লাখ ২৯ হাজার ৮৮৭ জন। ২০১৯ সালে সেখানে আত্মঘাতী ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ১২৩ জন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রেকর্ডই বলে দিচ্ছে, ধারাবাহিক ভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে।
প্রতি লাখে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ভারতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। এনসিআরবির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে গোটা দেশে আত্মহত্যার হার ছিল ১০.৫ শতাংশ। সেখানে ভারতে শহরগুলোতে এই হার ১৩.৯ শতাংশ। শহরের মানুষের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি।
মোট আত্মহত্যার ৫৩.৬ শতাংশই গলায় ফাঁস দিয়ে। বিষপানে মৃত্যু ২৫.৮ শতাংশের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু ৫.২ শতাংশের। গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি ৩.৮ শতাংশের। মোট আত্মহত্যার ৩২.৪ শতাংশ পারিবারিক সমস্যার কারণে (দাম্পত্য অশান্তি ছাড়া)। বৈবাহিক সমস্যার কারণে আত্মঘাতী ৫.৫ শতাংশ। অসুস্থতার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ১৭.১ শতাংশ। সবমিলিয়ে মোট আত্মহত্যার ৫৫ শতাংশই হলো এই তিন কারণে।
বিভিন্ন থানার পুলিশ রেকর্ড থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে এনসিআরবি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রতি ১০০ আত্মঘাতীর মধ্যে ৭০.২ শতাংশ পুরুষ। নারী ২৯.৮ শতাংশ।
যেসব পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন, তাদের মধ্যে ৬৮.৪ শতাংশই বিবাহিত এবং বিবাহিত নারীর আত্মঘাতীর সংখ্যা ৬২.৫ শতাংশ।
রাজ্যগুলোর মধ্যে আত্মহত্যার শীর্ষে মহারাষ্ট্র। ২০১৯ সালে রাজ্যে ১৮ হাজার ৯১৬ জন আত্মহত্যা করেন। তামিলনাড়ুতে আত্মঘাতীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৯৩ জন। আত্মহত্যার দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান তিনে-১২৬৬৫ জন।
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশে জনসংখ্যা বেশি হলেও আত্মহত্যার হার অন্য রাজ্যের থেকে তুলনামূলক কম। মাত্র ৩.৯ শতাংশ। গণ বা পারিবারিক আত্মহত্যার ঘটনা সবথেকে বেশি তামিলনাড়ুতে (১৬)। তার পরেই রয়েছে যথাক্রমে অন্ধ্রপ্রদেশ (১৪), কেরালা (১১), পঞ্জাব (৯) ও রাজস্থান (৭)।
এনসিআরবির তথ্য আরও বলছে, আত্মঘাতীদের মধ্যে ১২.৬ শতাংশ নিরক্ষর। ১৬.৩ শতাংশ প্রাথমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ১৯.৬ শতাংশ প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়েছেন কিন্তু অষ্টম শ্রেণির পর আর পড়েননি। ২৩.৩ শতাংশ ম্যাট্রিক পর্যন্ত পড়েছেন। স্নাতক বা তার ঊর্ধ্বে পড়াশোনা করেছেন এমন আত্মঘাতী মাত্র ৩.৭ শতাংশ।