বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ভারতের কাছ থেকে একই ধরনের ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতবিরোধী জঙ্গিদের উৎখাত করেছে তার সরকার। এবার ভারতের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পালা। কোনো কোনো জঙ্গি ভিন্ন দেশে গিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছে বিস্তারিত তথ্য আছে।’
শুক্রবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি থেকে যেভাবে ভারতের জঙ্গিদের উৎখাত করা হয়েছে, একইভাবে ভারতে ঘাঁটি করা বাংলাদেশি জঙ্গিদের নিশ্চিহ্নে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে নিহত দুজন বাংলাদেশি নাগরিক এবং তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে দাবি করেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। সে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর এর সঙ্গে জেএমবিসহ ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম) ও আল জিহাদের সম্পৃক্ততার আভাস পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন খবর পাই পশ্চিমবঙ্গেই আশ্রয় নিয়ে জঙ্গিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, তখন খুব খারাপ লাগে।’ মুক্তিযুদ্ধের সময় অকুণ্ঠ সহযোগিতা জোগানো পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এটা সহ্য করবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ভারতবিরোধী জঙ্গি দমনে অতীতে বাংলাদেশের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতীয় জঙ্গিদের আমরা সমূলে উৎখাত করেছি। অনেকের অনেক প্রভাবশালী বন্ধু ছিল। আমরা কাউকে রেয়াত (ছাড়) করিনি। আমরা আমাদের অঙ্গীকার পালন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের মানুষ এবার তাদের মাটি থেকে বাংলাদেশের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি উচ্ছেদ করুক। দেশের যেসব মানুষ এই জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিক।’ বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে অর্থের জোগান দেওয়া হয়েছিল বলেও সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে। এজন্য পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের মৌলবাদী দলগুলোকে কয়েক মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে বলে ভারতের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য জামায়াতে ইসলামীকে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এ কাজে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে রাজ্যসভায় তৃণমূলের এমপি আহমেদ হাসান ইমরানের নাম এসেছে। তবে তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে এখনো মুখ খোলেননি। শেখ হাসিনা জানান, খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের তদন্ত নিয়ে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তদন্তের ব্যাপারে ভারতকে সব রকম সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ। তদন্তের কাজে সাহায্য করতে শিগগির ভারতে যাবেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘এখান থেকে তাড়া খেয়ে জঙ্গিরা এখন প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছে। কারা এদের আশ্রয় দিয়েছে, কী চক্রান্ত চলেছে, এসব নিয়ে অনেক খবর আমাদের কাছে রয়েছে। তবে সব কথা এখনই বলা যাবে না।’