শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে চলছে ৮৪ ঘণ্টার হরতাল

ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে চলছে ৮৪ ঘণ্টার হরতাল

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ হরতালকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে হরতাল সমর্থক ও শিবির কর্মীরা।

শনিবার সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শিবিরকর্মীরা মিছিল বের করে ৮-১০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এসময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বিআরটিসি বাস ও একটি লোকাল বাসে আগুন দেয় তারা। খিলগাঁওয়ে হরতালের সমর্থনে মিছিল থেকে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

এদিকে সকালে পুরান ঢাকার আদালত পাড়া এলাকায় মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণের পর পুলিশের সাথে শিবির কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় পুলিশ ফাকা গুলি ছুঁড়লে শিবিরকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

কিছুক্ষণ আগে রাজধানীর নয়াপল্টন, টিঅ্যান্ডটি কলোনি ও ফকিরাপুল মোড়ে ৮টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। শনিবার সন্ধ্য পৌনে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে।

নয়াপল্টন মোড়ে প্রথমে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় হরতাল সমর্থকরা। ঠিক পরপরই ফকিরাপুল ও টিঅ্যান্ডটি কলোনি মোড়ে আরও দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

এর কিছুক্ষণ পর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের অপর পাশের রাস্তায় আরও তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

নয়াপল্টন এলাকায় এখন বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  আতঙ্কে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এছাড়া শনিবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে একটি গাড়িতে হরতাল সমর্থকরা আগুন দেয়। পরে ব্যারাক থেকে পুলিশ সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

এদিকে বেলা দেড়টার দিকে মিরপুর রূপনগরে একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। রূপনগর টিনশেডের ১৪ নম্বর রোডের মাথায় আশীর্বাদ পরিবহনের বাসটিতে কে বা কারা আগুন দেয়।

অপরদিকে শনিবার বিকাল ৩টার সময় গুলিস্তান মোড়ে হরতাল সমর্থনকারীরা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

হরতালের আগের দিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর পর মহাখালীতে আরেকটি দোতলা বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।

শনিবার দুপুরে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী বহনকারী বিআরটিসির বাসটিতে আগুন দেয়ার সঙ্গে জড়িত এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এর আগে সকালে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকামুখী বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন ধরানো হয়।

এছাড়া দুপুরের পর ফকিরাপুলে একটি এবং শান্তিনগরে একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। শান্তিনগরের গাড়িটি এক পুলিশ কর্মকর্তার। তবে আগুন দেয়ার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না।

এছাড়া রাজধানীর শাহবাগে শনিবার সন্ধ্যায় ইটিসি পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করেছে  দুর্বৃত্তরা। এতে আব্দুর রাজ্জাক মিঠু (২২) নামে এক ব্যক্তিসহ তিনজনের আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আহত আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির একজন কর্মচারী। সন্ধ্যায় কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার জন্য ইটিসির একটি বাসে ওঠেন। কিন্তু বাসে ওঠামাত্রই বাইরে থেকে কে বা কারা একটি পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারে। এতে রাজ্জাকসহ বাসের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তিনজন যাত্রী আহত হয়।এদিকে চট্টগ্রামে পিকেটারদের ধাওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা উল্টে ১ জন নিহত হয়েছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাটহাজারী থানার মদুনাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। এছাড়া নোয়াখালীতে হরতালে সমর্থনে মিছিল সমাবেশ করেছে জেলার যুবদল, ছাত্রদল ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা।হরতালে সমর্থনে নাটোরে রেল লাইন কেটে ফেলে ৪ ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। হরতালে নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে পারে এই আশঙ্কায় জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপি-শিবিরের ১১ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কালীবাড়ী মোড় এলাকা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে শহরের বিভিন্নস্থানে ককটেল বিস্ফোরণসহ পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

পুলিশ জানায়, সকাল ৬টার দিকে শহরের কালীবাড়ী মোড় এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি সমর্থকরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়।

এদিকে শহরের পাওয়ার হাউজ রোড এলাকায় বিএনপি’র সমর্থকরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালায় তারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫জন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া অন্তত আরো ২০ জন আহত হয়।

অপরদিকে শহরের কান্দিপাড়া, কালিবাড়ী মোড়, স্টেশন রোড, কলেজপাড়া, মৌড়াইল এলাকায় হরতাল সমর্থনকারীরা ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। হরতালের কারণে দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দূরপাল্লার কোন যান ছেড়ে যায়নি। শহরের বিভিন্নস্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।