শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ভাই-বোনের মৃত্যু > বাবা-মা খালা আটক, ঢাকায় আনা হচ্ছে

ভাই-বোনের মৃত্যু > বাবা-মা খালা আটক, ঢাকায় আনা হচ্ছে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে নিজ বাসভবনে দুই ভাই-বোন নুসরাত আমান অরনি (১২) ও আলভি আমানের (৬) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বাবা-মা ও খালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে র‌্যাব। তাদেরকে জামালপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে আটক করে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

আটককৃতরা হলেন- মৃত দুই ভাই-বোনের বাবা আমান উল্লাহ, মা মাহফুজা মালেক জেসমিন ও খালা আফরোজা মালেক নীল।

বুধবার (০২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুর জেলা শহরের ইকবালপুরের বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বাংলানিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বাবা-মা ও খালাকে জামালপুর থেকে আটকের পর র‌্যাব হেফাজতে তথ্য সংগ্রহের জন্য ঢাকায় আনা হচ্ছে।

শিশুদের বাবা আমান উল্লাহর স্থায়ী বাড়ি জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের রায়েরপাড়া গ্রামে। তাদের মা মাহফুজা মালেকের গ্রামের বাড়িও একই এলাকায়। আমান-মাহফুজা সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন।

এছাড়া জেলা শহরের ইকবালপুর এলাকায় তাদের ভাড়া বাসা রয়েছে। জামালপুরের দু’টি বাসা-বাড়ি রেখেও ব্যবসায়িক কারণে আমান উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকার রামপুরার বনশ্রীর বি ব্লকের ৪নং রোডের ৯ নম্বর বাসায় বসবাস করতেন।

অরনি ও আলভিকে মঙ্গলবার (০১ মার্চ) রাতে জামালপুরের পৌর গোরস্থানে দাফন করা হয়। এজন্য আটককৃতরা আগে থেকেই তাদের জামালপুরের বাসায় অবস্থান করছিলেন। র‌্যাব সূত্র জানায়, দুই সন্তানের মরদেহ দাফনের পর আমান-মাহফুজা দম্পতি এবং আফরোজাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। আরও অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

মৃত নুসরাত জাহান অরনি ঢাকা সিদ্ধেশ্বরী এলাকার ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। তার ছোট ভাই আলভি আমান হলিক্রিসেন্ট স্কুলে নার্সারি শ্রেণিতে পড়তো।

বনশ্রীর বাসায় সোমবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মৃত্যু ঘটে নুসরাত আমান অরনি ও আলভি আমানের।

শিশু দু’টির খালা আটককৃত আফরোজা মালেক নীল সে সময় দাবি করেছিলেন, দুই সন্তানকে নিয়ে বাবা আমান উল্লাহ এবং মা মাহফুজা মালেক জেসমিন রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে একটি স্থানীয় রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করেন। সেখানে কিছু খাবার অবশিষ্ট হলে সেটা প্যাকেটে করে বাসায় নিয়ে আসেন। সেই অবশিষ্ট খাবার দুই ভাই-বোন সোমবার দুপুরে খাওয়ার পরে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর বিকেলে তাদের ডাকাডাকি করা হলে তাদের কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে রাত পৌনে ৮টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওই চায়নিজ খাবারের বিষক্রিয়ায় ভাই-বোনের মৃত্যু ঘটেছে বলেও দাবি করে আসছিলেন স্বজনেরা।

তবে শ্বাসরোধে তাদের মৃত্যু হয় বলে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দু’জনের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অরনির চোখে রক্ত জমাট ও গলায় আঘাত এবং আলভির পা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।’

খাদ্যে বিষক্রিয়ার বিষয়ে জানতে তাদের ভিসেরা মহাখালীতে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি জানা যাবে বলেও জানান এ চিকিৎসক।

মঙ্গলবার (০১ মার্চ) যে রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে দুই ভাই-বোন মারা গিয়েছে বলে পরিবার থেকে বলা হয়েছিল, সেই কিন্ট চায়নিজ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ম্যানেজার মাসুদুর রহমান, বাবুর্চি আছাদুজ্জামান রনি ও তার সহযোগী আতাউরকে আটক করে পুলিশ। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বাংলানিউজকে জানান, ওই তিনজন ছাড়াও র‌্যাব-৩ এ ঘটনায় আরও তিনজনকে কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাসার দারোয়ান এবং ভাই-বোনের গৃহশিক্ষিকা ও একজন স্বজন। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম