শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব, তৈরি হচ্ছে ক্ষতির তালিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব, তৈরি হচ্ছে ক্ষতির তালিকা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সংস্কৃতি অঙ্গনে। আর এই ক্ষতি কখনো পূরণ হবে না বলেও মনে করছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তবে যাই হোক না কেনো এখন চলছে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ।

আর এসব কাজ করছেন স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এছাড়াও জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সকল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার রাতে মাদরাসা ছাত্র, পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মাদরাসা ছাত্র হাফেজ মাসুদুর রহমানের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সহপাঠিরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তাদের তাণ্ডবে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এ সময় বিক্ষুব্ধরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স, ব্যাংক এশিয়া, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষাচত্বরে ৫টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়, ইন্ডাস্ট্রিয়েল স্কুল, জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসাপাতাল ও কয়েকটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এদিকে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র কুমারশীল মোড়ে অবস্থিত সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হামলায় তার ব্যবহৃত জায়নামাজ, গালিচা, সরোদ, তানপুরা, এসরাজ, বেঙ্গুর, তবলা, সেতার, চিঠি ও তার বেশ কিছু দুর্লভ ছবি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যা আর কখনো ফিরে পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সঙ্গীত কর্মীরা।

এ বিষয়ে সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মান্নান বাংলামেইলকে জানান, টাকার অংকে খাঁ সাহেবের স্মৃতিকে বিবেচনা করলে হবে না। যে অমূল্য জিনিস তারা পুড়িয়েছে তা আর কখনো ফিরে পাওয়া যাবে না। তার ব্যবহৃত জিনিস ছাড়াও যেসব সরঞ্জামাদি পোড়ানো হয়েছে তাতে সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা শহরের পর্দা ব্যবসায়ী খোকন বলেন, ‘আমি কোনো রাজনীতি করি না। সাধারণ ব্যবসায়ী। আমার গুদামে কেনো আগুন দিয়েছে তা বুঝতে পারছি না। আমার প্রায় ৬০-৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন এই ক্ষতি আমি কীভাবে পুষিয়ে উঠব তা বুঝতে পারছি না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. মহিদুর রহমান বাংলামেইলকে জানান, তাণ্ডবের সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় তাদের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বাংলামেইলকে বলেন,‘মাদরাসা ছাত্র-শিক্ষকদের চালানো তাণ্ডবে জেলা শহরের প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন বাংলামেইলকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আমরা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের মৌখিকভাবে বলেছি তালিকা দেয়ার জন্য। আমরা সেসব তালিকা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। ইতোমধ্যে কিছু তালিকা আমরা পাঠিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খুব শিগগিরই এই তালিকা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করা হবে।’ বাংলামেইল২৪ডটকম