শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি > দুদকের রাতভর অভিযানে গ্রেফতার ৪

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি > দুদকের রাতভর অভিযানে গ্রেফতার ৪

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় আসামি ধরতে রোববার (২৭ মার্চ) রাত থেকে সোমবার (২৮ মার্চ) ভোর পর্যন্ত গোপনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ অভিযানে মোট চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটির বিশেষ টিম।

কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে আসামিদের গ্রেফতারে চিরুনি অভিযান চালায় দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে বিশেষ টিম।

রাজধানীর গুলশান, উত্তরা, বারিধারা, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে চলে এ অভিযান। অভিযানে গ্রেফতার করা হয় আসামি মেসার্স এমারেল্ড ড্রেস লিমিটেড এর সৈয়দ হাসিবুল গণি, এশিয়ান শিপিং বিডি প্রোপ্রাইটর মো. আকবর হোসেন, ফারশি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়েজুন নবী চৌধুরী এবং বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ইকরামুল বারী।

গ্রেফতারের বিষয়টি দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্রটি জানায়, আসামি হাসিবুল গণিকে মতিঝিল থানায় ৩৬, ৩৭ এবং ৪৫ নং মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বেসিক ব্যাংক থেকে এ আসামি ২০৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এশিয়ানের আকবর হোসেনকে গুলশান থানার ৫৬ নং মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বেসিক ব্যাংক থেকে এ আসামি ২৫ কোটি টাকা লোপাট করেছেন। ফারশি ইন্টারন্যাশনালের ফয়েজুন নবীকে রমনা থানার ৪০ নং মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বেসিক ব্যাংক থেকে এ আসামি ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ইকরামুল বারীকে মতিঝিল থানার ৫২ ও ৫৩ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বেসিক ব্যাংক থেকে এ আসামির বিরুদ্ধে ৪৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে।

আসামি আকবরকে উত্তরা থেকে, হাসিবুল গণিকে ধানমন্ডি থেকে, ফয়েজুন নবীকে গুলশান থেকে এবং ইকরামুলকে উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আসামিরা বর্তমানে রমনা মডেল থানায় রয়েছেন। আদালতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে দুদক।

দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে এ অভিযানে ছিলেন উপপরিচালক ঋত্বিক সাহা, শামসুল আলম মো. ইব্রাহিম, রফিকুল ইসলাম, মাহবুবুল আলম, সহকারী পরিচালক ফজলে হোসেন ও উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।

সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির আসামিরা দুদকের নজরদারিতে রয়েছেন। আসামিদের কেউ যেন বিদেশ যেতে না পারে সে জন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি দমন সংস্থাটি।

এছাড়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে বিভিন্ন বন্দরেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। আসামিদের নজরদারিতে রাখতে দুদকের একটি শক্তিশালী ইউনিটের পাশাপাশি একটি গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে। দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র এসব বিষয় বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্রটি জানায়, কয়েকজন আসামি গ্রেফতার এড়াতে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছেন-এমন তথ্যের ভিত্তিতে দুদক সতর্ক অবস্থান নেয়।

গ্রেফতার অভিযানের প্রথম ধাপে গত গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলের সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে থেকে বেসিক ব্যাংকের বরখাস্ত হওয়া উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ফজলুস সোবহান ও মোহাম্মদ সেলিম এবং উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক শিপার আহমেদকে গ্রেফতার করে দুদকের বিশেষ টিম। বর্তমানে এ আসামিরা কারাগারে।

প্রসঙ্গত, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে গত বছরের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর এ তিন দিনে ৫৬টি মামলা করেছেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলা দায়ের করে দুদক। ৫৬টি মামলায় মোট আসামি ১২০জন। মামলাগুলোতে মোট ২ হাজার ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ৯৪ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিক। ব্যাংকার ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম