শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বেনাপোলে নানা কারসাজিতে শুল্ক ফাঁকি!

বেনাপোলে নানা কারসাজিতে শুল্ক ফাঁকি!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ বেনাপোল(যশোর): দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারী বেনাপোল স্থলবন্দরে এখনো দিন বদলের হাওয়া লাগেনি। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন এখানে চলছে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আমদানি পণ্য ছাড়ের মোচ্ছব।

শুল্ক ফাঁকি বেড়ে যাওয়ায় ২০১১-১২ অর্থ বছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল ১শ’ ৯৪ কোটি টাকা। ২০১২-২০১৩ অর্থ বছর শেষে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ৪শ’ ৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকায়। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৪শ ২৪ কোটি টাকা। এবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে জানা গেছে।

বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, সরকার বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে আন্তরিক হলেও বেনাপোল স্থলবন্দরে এখনো তার হাওয়া লাগেনি। রাজস্ব ফাঁকি, ঘুষ বাণিজ্য ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবসায়ী,বন্দর ও কাস্টম কর্তারা কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের কারণে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলেছে বিগত কয়েক বছরের ইতিহাসে পরপর তিন বছর সবচেয়ে বেশি রাজস্ব হাতছাড়া হচ্ছে এই বন্দর থেকে।

রাজস্ব ফাঁকি রোধে করে কাজের গতি ও স্বচ্ছতা আনতে বেনাপোল কাস্টম কর্মকর্তাদের একের পর এক রদবদল করেও কোনো ফায়দা মিলছে না। শুল্ক-ফাঁকি প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতির কৌশল অবলম্বন।

২০১২ থেকে ২০১৪ অর্থবছর পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে প্রায় ৫ শতাধিক পণ্যচালান জব্দ করা হয়। কিন্তু আটকের পর এসব পণ্য কাস্টম কর্মকর্তারা প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে কখনো গোপন সমঝোতায় আবার কখনো অর্থবাণিজ্য করে ছেড়ে দিয়েছেন বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। মাঝে মধ্যে চুক্তিবিহীন দু-একটি চালান আটক হলেও লোক দেখানো তদন্তে এখানেও কাস্টম কর্মকর্তারা বিপুল পরিমাণে অর্থবাণিজ্য করে বাঁচিয়ে দিচ্ছেন দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের। ফলে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে তারা।

কাস্টম-সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবৈধ আয়ের একটি বড় উৎস নন-পিএসআই ও বন্ডের মাধ্যমে আমদানি করা পণ্য চালান থেকে। সিআরএফ ছাড়াই বছরে গড়ে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি চালান এভাবে আমদানি হচ্ছে আন্ডার ইনভয়েসে। এবং বন্ডের মাধ্যমে আমদানি হচ্ছে আরো ১০ হাজার পণ্য চালান। প্রতিটি চালান থেকে যদি গড়ে ১০ হাজার টাকা করেও ঘুষ বা কমিশন আদায় করা হয় তাহলে বছরে কাস্টম কর্মকর্তাদের উপরি আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১শ ২৫ কোটি টাকা। এত লোভনীয় আয়ের উৎস যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট কাস্টম কর্মকর্তারা সব সময়ই এসব অসাধু আমদানিকারকের শুল্ক-ফাঁকি প্রথা চালু রেখে স্বার্থরক্ষা করে চলেছেন।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস যুগ্ম কমিশনার ফাইজুর রহমান সোমবার বিকাল ৪ টায় বাংলানিউজকে জানান, কাস্টম কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই। মাঝে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবরোধ,হরতালের কারণে রাজস্ব আয় কমেছিল। তবে বর্তমানে রাজস্ব আয়ে গতি ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে। শুক্র-শনিবারেও অফিস খোলা রাখা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যসাত্রা যথাসময়ে পূরণ করা সম্ভব হবে।