লাইফস্টাইল ডেস্ক ॥ রোগী যেন গবেষণাগারের গিনিপিগ৷ চিকিৎসক কখনো ওষুধ দেন, কখনো আবার পরামর্শ৷ অথচ কারো কারো একটাতেই কাজ চলে৷ কিন্তু কার কোনটা দরকার সেটা বোঝার উপায় কী? এ নিয়ে এতদিনের সংশয় বোধহয় দূর হতে চলেছে৷
যুক্তরাষ্ট্রের ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৬৭ জন বিষাদগ্রস্তকে নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছেন৷ ৬৭ জনের মধ্যে ৪০ জনের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে তাঁরা দেখেছেন, তাঁদের জন্য ওষুধ লাগবে, নাকি মনশ্চিকিৎসক অথবা মনস্তত্ত্ববিদের পরামর্শই কার্যকর হবে – সেটা আগেই বলে দেয়া সম্ভব৷ আসলে ইনসুলার কর্টেক্স বা ইনসুলাই বলে দেয় কার জন্য কোন চিকিৎসাটা কার্যকর৷
কানের ঠিক ওপরে থাকে ইনসুলা৷ গবেষকরা দেখেছেন, যাঁদের ইনসুলায় গ্লুকোজ বেশি, তাঁদের কোনো ওষুধ না খেয়ে, শুধু মনশ্চিকিৎসা নিলেই চলে৷ তবে ইনসুলা বেশি সক্রিয় নয় বলে গ্লুকোজ যাঁদের কম থাকে, তাঁদের ওষুধ খাওয়া ছাড়া গতি নেই৷ গবেষকরা অবশ্য দাবি করছেন না যে, এুনি চূড়ান্ত কথা বলার সময় এসে গেছে৷ তাঁরাও মনে করেন, বিষয়টি আরো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে৷
তবে শেষ পর্যন্ত যদি তাঁদের অনুমান সত্যি হয়, তাহলে যে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের উপকার হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ জীবনে আনন্দের মতো বিষাদ কার জীবনে না আসে! বিষাদের মাত্রা বেশি হলে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন অনেকে৷ সে অবস্থায় কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নেন৷ সেই পর্যায়ে যাবার আগেই দরকার সুচিকিৎসা৷ কিন্তু সুচিকিৎসা কোথায় আছে?
জার্মানির বন ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মনশ্চিকিৎসক ভল্ফগাং মায়ার জানালেন, বিষাদগ্রস্থ রোগীদের সবচেয়ে বড় সমস্যার কথা৷ তাঁর মতে, বেশির ভাগ েেত্রই রোগী কোনো মনশ্চিকিৎসক অথবা মনস্তাত্ত্বিকের কাছে গেলে তিনি মনশ্চিকিৎসাই চালিয়ে যান৷ ওষুধের দরকার আছে কিনা তা খুব কমই ভেবে দেখেন৷ আবার সাধারণ ডাক্তারদের কাছে গেলে তাঁরা শুধু ওষুধ দিয়েই ান্ত, রোগীর মানসিকতায় পরিবর্তন আনার বিকল্প রাস্তাটিতে রোগীকে তাঁরা পাঠান না৷ যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যাটলান্টার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্ভাবনটি যদি শেষ পর্যন্ত সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে বিষাদগ্রস্থরা এই বিপদ থেকে রেহাই তো পাবেনই।