বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বুধবার বিরল এক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং হবে এদিন হোয়াইট হাউজে। বিরল বা অস্বাভাবিক ঘটনা সেটাও নয়। অস্বাভাবিক হলো, এই ব্রিফিংয়ে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পুরো সিনেটকে তলব করেছেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে ট্রাম্প প্রশাসন কতটা জোরালোভাবে, গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এ থেকে সেটাই প্রতীয়মান হয়। এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছে ১৫৪টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুক্তরাষ্ট্রের ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন ইউএসএস মিশিগান। এতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ শুরুর আরো একটি আলামত ফুটে উঠেছে। আর এতে একের পর এক পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুুক্তি পরীক্ষা চালিয়ে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ পরিষদের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার (পারমাণবিক) অগ্রগতি বন্ধ করার বিষয়টি সমাধান করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন গার্ডিয়ান। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ওই বৈঠকে ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়া এখন যে আচরণ করছে তা মেনে নেয়া যায় না। তাই তাদের পারমাণবিক ও ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূটির বিরুদ্ধে আরো কঠোর শক্তিশালী অবরোধ করতেই হবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে। তিনি আরো বলেন, বিশ্বের জন্য একটি বড় সমস্যা হলো উত্তর কোরিয়া। এটা এমন একটা সমস্যা যা আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত সমাধান করতেই হবে। একই পরিষদে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে একই ইস্যুতে আগামী শুক্রবার বৈঠক করার কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের। সেখানে তিনি আরো একবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্যমান অবরোধ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানাবেন। অথবা পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাবেন। ওদিকে বুধবার সিনেটরদের ব্রিফ করবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস মাত্তিস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। পুরো সিনেট নিয়ে এমন ব্রিফিং অপ্রত্যাশিত নয়। তবে তা হোয়াইট হাউজে হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ব্রিফিং হবে হোয়াইট হাউজের আইজেনহাওয়ার এক্সিকিউটিভ অফিস বিল্ডিংয়ে। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র মাইকেল অ্যানটন বলেছেন, যেহেতু সিনেটের বৈঠক করার মতো নিজস্ব জায়গা আছে তবু এমন ব্রিফিং আহ্বান করেছেন প্রেসিডেন্ট। তিনি সিনেট সংখ্যাগুরু নেতা মিশ ম্যাকনেলকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। ম্যাকনেল তা মেনে নিয়েছেন। ফলে হোয়াইট হাউজেই ব্রিফিং হবে। তবে মনে রাখতে হবে এটা সিনেটের মিটিং। এটা হোয়াইট হাউজের কোনো মিটিং নয়। তবে কি কারণে হোয়াইট হাউজকে ব্রিফিংয়ের ভেনু হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে সিনেট কর্মীরা নিশ্চিত নন। তবে আন্দাজ করা যায়, উত্তর কোরিয়ার বিষয়টিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার ক্ষমতা গ্রহণের শততম দিনে নিজের কর্মতৎপরতা প্রদর্শন করতে এমনটা করা হয়ে থাকতে পারে। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন যে বক্তব্য রাখবেন তা সোমবার পর্যন্ত জানতে পারে নি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পিয়ংইয়ং যদি আরো পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কি করবে? নিকি হ্যালি জবাবে এনবিসি নিউজকে বলেছিলেন, আমি মনে করি তখন প্রেসিডেন্ট নিজেই পদক্ষেপ নেবেন। কি করতে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সোমবার তিনি বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র।