বিনোদন ডেস্ক ॥ যাক্! অবশেষে তাহলে খরা কাটল বঙ্গবালার! এই তো সেদিনও এক বুক হাহাকার নিয়ে হিসহিসিয়ে বলেছিলেন বিপাশা, কতদিন এই পিপাসার্ত জমিতে এক ফোঁটাও প্রেমের বাদল ঝরেনি! আজ কিন্তু ছবিটা একেবারেই আলাদা। প্রেমের বাদল নেমেছে বিপস্-এর বুকে আর সেই উতলা অঝোরধারায় আশ মিটিয়ে ভালই ভিজছেন কন্যে। অবশ্যই একা নন, দোকা! মনের মানুষটির নাম হরমন বাওয়েজা।
হরমন বাওয়েজা? সেই হরমন নন তো, প্রেম ভাঙলেই বলিউডে যাঁকে দিন কয়েকের জন্য আঁকড়ে ধরেন নায়িকারা? বিশেষ করে বলিউডের কৃষ্ণকলিরা? প্রিয়ঙ্কা চোপড়াও এমনই কিছু একটা ঘটিয়েছিলেন না এই হরমনের সঙ্গেই? তার পর কি বিপাশা নামলেন হরমনের মানবজমিন আবাদ করতে?
তফাতের মধ্যে, বিপাশা অন্তত হরমনকে এখনই ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন না। বরং পছন্দসই পুরুষমানুষটিকে নিয়ে রীতিমতো বিভোর হয়ে রয়েছেন কন্যে। মিডিয়াকে বলেও দিয়েছেন সাফ সাফ ট্যুইট করে, ‘যেটা সত্যি, সেটাই বলছি! হ্যাঁ, হরমন আর আমি একান্তভাবেই কাপল! অবশেষে আমি এমন কাউকে খুঁজে পেয়েছি, যে আমার চেয়ে সব দিক থেকেই অনেক বেশি ভাল মানুষ’!
আসলে, বিপাশাকে নিয়ে তো পাঁচ কথা সাত মুখে রটেই থাকে। জন আব্রাহামের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর তো আরওই রটেছিল। রাণা ডুগুবতির জন্মদিনে সন্ধেবেলায় কেউ হোটেলের ঘর থেকেই বেরোননি, জোশ হারনেটের সঙ্গে গাড়ি করে শ্যুটিং স্পটে আসতে ভীষণ দেরি করে ফেললেন নায়িকা- গুজব কি আর একটা? নাকি পুরুষমানুষের সংখ্যা কম?
কিন্তু কাছের মানুষেরা ভালই জানতেন যে, ভিতরে ভিতরে একা হয়ে যাচ্ছেন কলকাতার কমললতা! সময়টাও খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না তাঁর। বিশেষ করে, এক সময়ের কাছের মানুষদের দুর্ব্যবহার আগের চেয়েও একরোখা আর জেদি করে তুলছিল মেয়েকে। জন আব্রাহাম যে পেশাদারিত্বে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের ছবি থেকে সরিয়ে দিতে চাইবেন বিপাশাকে, তাও কি আগে ভাবতে পেরেছিলেন কন্যে? নাকি, জানতে পারার পর খুব সহজ ছিল ব্যাপারটা মেনে নেওয়া?
অথচ, চার দিকে সব্বাই, এমনকী বাবা-মাও জনের সঙ্গে ছাড়াছাড়িটা নিয়ে আঙুল তুলছিলেন বনির দিকেই। নায়িকার মা তো স্পষ্ট বলেই দিয়েছিলেন যে, জনের মতো এত ভাল ছেলে বিপস্ আর পাবেন কি না সন্দেহ! সেই সব শুনতে শুনতে আর সহ্য করতে করতে যখন একেবারে কোণঠাসা কন্যে, ঠিক তখনই তাঁর সঙ্গে আলাপ হল হরমনের।
তা, প্রথমটা মেয়ে হরমনকে নিয়ে কতটা সিরিয়াস ছিলেন, সে প্রশ্ন অবশ্য এক ফাঁকে তোলা যেতেই পারে! কিন্তু, কী আসে-যায় এসব প্রশ্নে? এখন তো সব কিছু ঠিক আছে তাঁদের মধ্যে। সুন্দরভাবে জমে উঠেছে রসায়ন, একে অপরকে ভালভাবে বুঝতেও পেরেছেন তাঁরা। ‘বিপাশা খুব সোজাসাপ্টা আর সৎ এক মেয়ে, একইসঙ্গে খুব কেয়ারিংও! আর আমরা দুজনেই ভীষণ ইমোশনাল’, রসায়নটাকে এভাবেই ব্যাখ্যা করতে চান হরমন বাওয়েজা। এও বলছেন ছেলে মেয়ের প্রশংসা করে, ‘বিপাশা বলছে বটে যে কে বেশি ভাল মানুষ আমাদের মধ্যে, কিন্তু সত্যিটা তো সবাই জানেন’!
নিন্দুকরা অবশ্য বলছেন, এ সবে কান না দিলেই ভাল করবেন বিপাশা। ছেলেদের অত বিশ্বাস করতে নেই। জনও তো বিদেশ ঘুরে একগাদা কেনাকাটি করে, মেয়ের পছন্দের ঝাড়লণ্ঠন দিয়ে একখানা অ্যাপার্টমেন্ট সাজিয়ে দিয়েছিলেন! তা, সেই হাজার হাজার টাকার ঝাড়বাতির আলোও তো প্রেমের মতোই নিভু-নিভু হয়ে এল। তাহলে?
তাহলে আবার কী! নায়িকা নিজে যখন মনে করছেন ভাল আছেন, তখন আর কী প্রশ্ন উঠতে পারে? তাছাড়া সত্যিই বোধহয় এখন সময়টা ভাল যাচ্ছে দুজনেরই। হরমন বাওয়েজাও হাতে ছবি পেয়েছেন অনেক দিন পরে, ও দিকে বিক্রম ভট্টও নতুন থ্রিডি ভয়ের ছবিতে রাখতে চাইছেন তাঁর লাকি চার্ম বঙ্গবালাকে। তাছাড়া, মনটাও ইদানিং সত্যিই ভাল আছে বিপস্-এর; সারা বলিউড দেখছেও তার সাইড এফেক্টস্। এই তো সেদিন এক অনুষ্ঠানে এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী করিনা কপূর খানকে জড়িয়ে কী চুমুটাই না খেলেন বিপাশা। একসঙ্গে হাত ধরে অনেকক্ষণ খোশগল্পও করলেন তাঁরা। মনে শান্তি না থাকলে কি আর এসব হয়?
তাও একটা খচখচানি থেকেই যাচ্ছে! শেষ মুহূর্তে বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত এগোবে তো সম্পর্কটা?
চিন্তা নেই, নিজেই বলেছেন কন্যে, ‘আমরা এই বছরের শেষের দিকেই বিয়ে করতে পারি’।