শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে মিশর

বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে মিশর

শেয়ার করুন

বাংলাভুমি ডেস্ক ॥ বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে মোড় নিয়েছে মিশর সঙ্কট। একের পর এক লাশ পড়ছে সেখানে। গতকালও কমপে ৪২ জনের রক্তে লাল হয়েছে কায়রোর পিচঢালা পথ। এর প্রায় সবাই মতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির সমর্থক। তবে নিহত হয়েছেন এক সেনা সদস্যও। ক্রমেই মিশরের ভঙ্গুর অর্থনীতি ক্রমশ অতলে চলে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় মিশর গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মুরসি সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিােভ, অবস্থান ধর্মঘট চলছেই। তাকে এখন আটক রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীর ব্যারাক রিপাবলিকান গার্ড ভবনে। গতকাল সকালে মুরসি সমর্থকদের দিকে প্রকাশ্যে সেনারা গুলি করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে কমপে ২০০ মানুষ আহত হয়েছে। মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুড এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিশরবাসীকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, ‘একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ’ রিপাবলিকান গার্ড ভবনে হামলা করে। এতে এক সেনা সদস্য নিহত হয়। আহত হয় ৪০ জন। সশস্ত্র হামলাকারীদের আক্রমণের জবাবে গুলি করেছে সেনারা। রাবা আদাওয়ি মসজিদের কাছে একটি হাসপাতাল এখন আহত ও রক্তাক্ত মানুষে ঠাসাঠাসি। তাদের বেশির ভাগেরই কাপড়, বিছানা রক্তে ভেজা। ব্রাদারহুডের মুখপাত্র জেহাদ হাদ্দাদ বলেছেন, গতকাল সকালে লোকজন যখন নামাজ আদায় করে সেনা ব্যারাকের বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল তখন সেখানে গুলি চালায় সেনারা। ওদিকে মুরসিকে মতা থেকে নামানোর সময় সেনাবাহিনীকে সমর্থন দিয়েছিল যে নুরি পার্টি-ও এখন বেঁকে বসেছে। তারা অন্তর্র্বতী সরকার নিয়ে যে সমঝোতা তা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেছে। মুসলিম ব্রাদারহুড সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। কিন্তু সেনাবাহিনী বলেছে, মুরসিকে সরিয়ে দেয়া কোন সামরিক অভ্যুত্থান নয়। ৩০শে জুলাই থেকে কয়েক লাখ মানুষ রাজপথে যে দাবি জানিয়ে আসছিল তার প্রেেিত তারা এমন পদপে নিয়েছে। ওদিকে মুরসির সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে রাজধানী কায়রো, বড় শহর আলেকজান্দ্রিয়া ও অন্যান্য শহরে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ চলছে। এতে শুক্র ও শনিবারেই নিহত হয়েছেন ৩৫ জন। এর ফলে আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ, যার লোকসংখ্যা ৮ কোটি ৪০ লাখ, তা রয়েছে এক বিপজ্জনক অবস্থায়। সেখানে এরই মধ্যে নানারকম বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে নাগরিকদের মাঝে। কায়রোর উত্তর-পূর্বের শারিকিয়া প্রদেশের আবদেল আজিজ আবদেল শাকুয়ার ডান পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি বলেছেন, আমরা ফজরের নামাজ আদায় করার সময়ই গুলির শব্দ শুনতে পাই। অকস্মাৎ রিপাবলিকান গার্ড ভবনের দিক থেকে আমাদের ওপর গুলি করা হয়। তারা রাবার বুলেট, বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে থাকে। মিশরে আল জাজিরার নিউজ চ্যানেল যে ফুটেজ প্রচার করে তাতে দেখা যায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। চিকিৎসকরা গুলিবিদ্ধ লোকজনকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এই ঘটনার পর রাবা আদাওয়িয়া মসজিদের চারপাশের রাস্তাগুলো সেনাবাহিনী বন্ধ করে দিয়েছে সাঁজোয়া যান বসিয়ে। ঐতিহাসিক নীল নদের ওপর স্থাপিত প্রধান দুটি সেতুর দু’প্রান্তেও মোতায়েন করা হয়েছে সাঁজোয়া যান।