বিনোদন ডেস্ক ॥
বলিউড অভিনেত্রী বিদ্যা বালানের কর্মজীবন ধীরে ধীরে আবার গতি পাচ্ছে। চলতি বছর তিনটি নতুন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। তাই বলা চলে তার হাতভর্তি এখন কাজ!
ক’দিন হলো বিদ্যা শেষ করেছেন সুজয় ঘোষ প্রযোজিত ‘তিন’-এর কাজ। এবার তার পরিচালনায় ‘কাহানি টু’তে অভিনয় করবেন তিনি। এ ছাড়া সৃজিত মুখার্জির বাংলা ছবি ‘রাজকাহিনি’র হিন্দি রিমেক ‘বেগম জান’-এ তাকে নিয়েছেন প্রযোজক মহেশ ভাট।
এবার বিতর্কিত লেখিকা কমলা দাসের জীবন নিয়ে সাজানো একটি ছবিতে অভিনয়ের সম্মতি জানিয়েছেন বিদ্যা। এটি তৈরি হবে হিন্দি ও মালয়ালাম ভাষায়। পরিচালনা করবেন মালয়ালাম নির্মাতা কমল। তিনি বলেন, ‘নারীদের যৌনতাকে ‘ইশকিয়া’ ও ‘দ্য ডার্টি পিকচার’-এর মতো ছবিতে সাহসিকতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন বিদ্যা। তাই শুরু থেকে আমার নতুন ছবির প্রথম পছন্দ ছিলেন তিনি।’
২০০৩ সালের কমলের পরিচালনায় মালয়ালাম চলচ্চিত্র শিল্পে এসেছিলেন বিদ্যা। মোহনলালের বিপরীতে ‘চক্রম’ ছবির কাজও শুরু করেছিলেন তিনি, কিন্তু এক সপ্তাহ দৃশ্যধারণের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। ওই একই পরিচালকের ছবিতে আবার কাজ করতে যাচ্ছেন তিনি।
কমলা দাস ছিলেন মুক্তমনা কবি, লেখক ও কলামিস্ট। নারীদের যৌনতা নিয়ে ব্যাপকভাবে লিখতেন তিনি। এ কারণে ব্যাপক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে তাকে। মাথরুভূমি পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ৬৭ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে হয়ে যান কমলা সুরাইয়া।
ছবিটিতে তিন ভাগে বলা হবে কমলা দাসের জীবনের গল্প। প্রথম ভাগে থাকবে ১৫ বছর বয়সে ব্যাংকার মাধব দাসের সঙ্গে বিয়ের কথা। দ্বিতীয় ভাগটা হবে তার আত্মজীবনী ‘এন্তে কথা’ (মাই স্টোরি) নির্ভর। আর শেষ ভাগে দেখানো হবে ইসলাম গ্রহণের দিক ও মুসলিম নারী হিসেবে তার পরবর্তী সময়কে।
জানা গেছে, কমলা দাস হওয়ার জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বিদ্যা। তিনি এখন লেখিকার আত্মজীবনী পড়ছেন। এ ছাড়া মালয়ালাম ভাষায় প্রকাশিত ছোটগল্পের অনুবাদ আনিয়ে নিচ্ছেন। চলতি বছরের শেষ প্রান্তে ছবিটির দৃশ্যায়ন শুরু হবে। কাজ চলবে জার্মানি, স্পেন ও ফ্রান্সে।
এর আগে ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ ছবিতে দক্ষিণী ছবির বিতর্কিত নায়িকা সিল্ক স্মিতা চরিত্রে অভিনয় করে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন বিদ্যা।
এদিকে বাংলা ছবির নির্মাতাদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করলেও গৌতম হালদারের ‘ভালো থেকো’র (২০০৩) পর বাংলা ভাষার ছবিতে আর দেখা যায়নি বিদ্যাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনও মনের মতো চিত্রনাট্য পাইনি। প্রস্তাব নিয়মিতই পাই, কিন্তু কোনোটা নিয়েই আলাদাভাবে উচ্ছ্বসিত হতে পারিনি। অবশ্য বাংলা ছবিতে কাজ না করলে বাঙালি পরিচালকদের সঙ্গে ঠিকই কাজ করছি।’
‘কাহানি’র (২০১২) আগে বিদ্যা অভিনীত ‘পরিণীতা’ (২০০৫) ও ‘ভুল ভুলাইয়া’ (২০০৭) ছবি দুটিতেও বাংলার সঙ্গে যোগসাজশ দেখা গেছে। ‘তিন’-এর মাধ্যমে অনেকদিন পর কলকাতায় ফের কাজ করলেন তিনি। এখানে তিনি পেয়েছেন ‘কাহানি’ টিমকে। আগামী মাসে কলকাতায় শুরু করবেন ‘কাহানি টু’র কাজ।
এদিকে ভারতের কেরালায় কিছু মন্দিরে মেয়েদের প্রবেশে আইনিভাবে নিষিদ্ধ করার জোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিদ্যা। তার মতে, নারীদেরকে নিয়ে গৎবাঁধা ধারণার বাইরে এসে ভাবা প্রয়োজন। তা না হলে অগ্রসর হতে পারবে না জাতি। বাইরের চেয়ে বন্ধু ও পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গিই মেয়েদের জীবনে প্রভাব ফেলে বেশি।
বিদ্যা বলেছেন, ‘কর্মক্ষেত্রে, সামাজিক জীবন ও সবখানে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ থাকা দরকার। আমার মনে হয়, আমরা মেয়েরাই নিজেদের আটকে ফেলছি। এখনও কিছু পেশা শুধু ছেলেদের জন্যই বরাদ্দ, মেয়েরা সেখানে শুধু শোপিস।’