বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বিদেশে অবস্থান করলেও সরকার ও দলের সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজখবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওয়াশিংটনে বসেই প্রতিটি বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।
স্বাক্ষর করছেন সরকারি বিভিন্ন ফাইলও। রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ঘটনাক্রম সম্পর্কেও দিচ্ছেন নির্দেশনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে রয়েছে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২ অক্টোবর দেশে ফিরলে ঢাকায় ব্যাপক সংবর্ধনার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। জাতিসংঘের বিশ্বসভায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার অনন্য ভূমিকার জন্য এ সংবর্ধনার প্রস্তুতি। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্র জানায়, জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান শেষে গত শুক্রবার তিনি নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন পৌঁছান। যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী জরুরি সব ইলেকট্রনিক ফাইল (ই-ফাইল) প্রেরণের জন্য তার কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়ে যান।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর সুবিধা গ্রহণ করে তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ই-মেইলের মাধ্যমে জরুরি ই-ফাইলগুলো ওয়াশিংটনে পাঠাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী সেগুলো দেখে গত কয়েক দিনে বেশ কিছু জরুরি গুরুত্বপূর্ণ ই-ফাইল ডিজিটালি নিষ্পত্তি করেছেন। রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে কক্সবাজারে সার্বক্ষণিক অবস্থানকারী কয়েকজন দলীয় শীর্ষ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের কাছ থেকেই সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি। এমনকি মিয়ানমারের বিমান বাংলাদেশের আকাশসীমা অতিক্রম করে যে উসকানি দিয়েছে সে বিষয়েও তাত্ক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সূত্র জানায়, ওয়াশিংটনে এক সপ্তাহ অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। লন্ডন হয়ে আগামী ২ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তাকে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত বিশাল সংবর্ধনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর। কারণ নগরবাসীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সর্বশেষ ভারত সফর শেষে আয়োজিত সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রী নিজেই বাতিল করে দিয়েছিলেন। এ কারণে এবার আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে সংবর্ধনার প্রস্তুতি শুরু করলেও সভানেত্রীর গ্রিন সিগন্যাল ছাড়া প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না। আজ ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি সম্পাদক এবং দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদকদের নিয়ে একটি বৈঠক করার কথা ছিল।
কিন্তু তা স্থগিত করা হয়েছে। দলের একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের কর্মসূচি স্থগিত : আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। তার ৭০তম জন্মবার্ষিকী ঘটা করে পালনের প্রস্তুতি নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ বাংলাদেশের বন্যাপীড়িত মানুষের দুর্দশার কথা বিবেচনায় রেখে জন্মদিনের সব আনুষ্ঠানিকতা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভার্জিনিয়ায় পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতনিদের সঙ্গে একেবারেই পারিবারিক আবহে জন্মদিনটি কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা ইতিমধ্যেই সব অঙ্গরাজ্য এবং মহানগর কমিটিকে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভার্জিনিয়ায় জড়ো হয়ে শেখ হাসিনার জন্মদিনের কেক কাটতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি খুবই ভারাক্রান্ত হওয়ায় এ কর্মসূচি স্থগিতের নির্দেশ দেন। বাংলাদেশ প্রতিদিন