বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বিদেশি ১০টি দূতাবাসের বিভিন্ন পদে কর্মরত ২৮জন বাংলাদেশি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি পেয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, এ ঘটনা সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন। বিদেশি হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক ভোট পর্যবেক্ষণে কোনোভাবেই কেন্দ্রে প্রবেশে অনুমতি পেতে পারে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলার জন্য কূটনীতিকদের বলেছি। কেননা বেশকিছু বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। কীভাবে এটা ঘটল জানি না। এটি নির্বাচন কমিশন ভালো বলতে পারবে।’
শুক্রবার রাজধানীর আশকোনায় হাজী ক্যাম্পে এক ব্রিফিং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে এনে অস্থায়ী রাখার জন্য সরকার নির্ধারিত হাজী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকর্মীদের এ প্রসঙ্গে বলেছেন, বিদেশি সংস্থার যেসব বাংলাদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন, তাদের কাজ নির্বাচন কমিশন নজরে রাখবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমাদের দেশে যারা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে আসবে, আইন অনুযায়ী তারা বাংলাদেশের নাগরিক হতে পারে না। কিন্তু দুভার্গ্যবসত আমাদের এখানকার বিদেশি মিশন বা সংস্থায় যে সব বাংলাদেশি নাগরিক কাজ করছেন, তাদেরকে মিশন বা সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, যা আইনের লঙ্ঘন। এ জন্য আমরা তাদেরকে কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলার কথা বলেছি।
‘কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘনের ঘটনায়’ এখনও কিছু করার আছে কিনা গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি নির্বাচন কমিশন জানে। নির্বাচন কমিশন সবই জানে, তাদের কাছে আইন রয়েছে। যে সব বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তারা ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের জন্য অনুমতি পেতে পারে না।
জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ ১ হাজার ৮৭জন দুই সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এদের মধ্যে ২২টি দেশি সংস্থার মাধ্যমে ১ হাজার ১৩ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক রয়েছেন।
অন্যদিকে ১০টি দূতাবাসের মাধ্যমে ৭৪ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এদের মধ্যে ৪৬ জন সরাসরি বিদেশি নাগরিক এবং ২৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। এই ২৮ জন বাংলাদেশি ১০টি দেশের দূতাবাসে বিভিন্ন পদে কর্মরত।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, ১০টি দূতাবাসের মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে ২৭ জন পর্যবেক্ষক দুই সিটি নির্বাচন পরিদর্শন করবেন। এ ২৭ জনের মধ্যে ১৮ জন বিদেশি এবং ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। এ ছাড়াও ব্রিটেনের দূতাবাসের মাধ্যমে ১২ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন বিদেশি নাগরিক এবং সাতজন বাংলাদেশি নাগরিক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচজন পর্যবেক্ষকের সবাই ইউরোপের নাগরিক। নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের রয়েছেন ৬ জন, এদের মধ্যে ৫ জন বিদেশি। সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ৬ জন পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন বিদেশি নাগরিক। জাপান দূতাবাসের মাধ্যমে পাঁচজন, যাদের মধ্যে তিনজন বিদেশি নাগরিক। ডেনমার্ক দূতাবাসের মাধ্যমে তিনজন, যাদের দুইজন বিদেশি নাগরিক, নরওয়ে দূতাবাসের চারজন, এদের মধ্যে দুইজন বিদেশি, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন থেকে দুইজন বিদেশি নাগরিক। কানাডা হাইকমিশন থেকে চারজন, এদের মধ্যে দুইজন কানাডিয়ান নাগরিক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।