শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বিচ্ছিন্ন সংযোগ আবার চালু ॥ গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতার গ্যাস সংযোগে হরিলুট

বিচ্ছিন্ন সংযোগ আবার চালু ॥ গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতার গ্যাস সংযোগে হরিলুট

শেয়ার করুন

কালিয়াকৈর ব্যুরো ॥ কালিয়াকৈর উপজেলার ধোপাচালা এলাকায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বিচ্ছিন্ন করা অবৈধ গ্যাস-সংযোগগুলো আবার চালু করা হয়েছে। তিতাসের কর্মকর্তা ও স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাদের যোগসাজশে এটা হয়েছে। ফলে অবৈধ গ্যাস-সংযোগের বাণিজ্য আর থামছে না।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি সায়মান সরকারের সহযোগিতায় বাঘবাড়ী, সরুপাইতলী, শৈলডুবি ও সুরাবাড়ী এলাকায় গ্যাসের অবৈধ্য সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। ওই চারটি এলাকায় এক হাজার ৬০০ বাড়িতে অবৈধ্য সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য ছাত্রলীগের নেতা ও তাঁর সহযোগীরা প্রায় ছয় কোটি ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন।
পাশাপাশি চারটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, অবৈধ গ্যাস নেওয়ার যেন উৎসব চলছে। যে যার মতো করে যেখানে-সেখানে অল্প একটু গর্ত করে পাইপ বসিয়ে নিচ্ছে। অনেক স্থানে পাইপ মাটি থেকে বের হয়ে আছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে বলেও মনে করছেন এই গ্রাহকেরা।
গাজীপুরের যে চারটি এলাকায় অবৈধ গ্যাসলাইনের সংযোগ চলছে, তা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আওতাধীন। ওই এলাকাটি পড়েছে গাজীপুর শাখার চন্দ্রা জোনের মধ্যে। এই জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, এ কাজে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা জড়িত। এখানে যা হচ্ছে, তা ডাকাতি ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাচনের কারণে অভিযান বন্ধ ছিল।
গাজীপুরের বাঘবড়ী ঈদগাহ মাঠের পশ্চিম পাশের সড়ক দিয়ে গ্যাসলাইন চলে গেছে ছাত্রলীগের নেতা সায়মন সরকারের বাড়ি পর্যন্ত। একই গ্রামের সানাউল্লাহ সরকার, হাবিব উল্লাহ ও কামাল হোসেন বাঘবাড়ী এলাকায় ৫০০ গ্রাহকের কাছ থেকে গড়ে ৪০ হাজার টাকা করে নিয়ে অবৈধ সংযোগ দিয়েছেন।
শৈলডুবি এলাকায় সায়মনের অনুসারী রমিজ উদ্দিন, লেহাজ উদ্দিন, তাহাজ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা তুলছেন। বাঘবাড়ী এলাকার এক গ্রাহক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁরা গ্যাসের টাকা দিয়েছেন সায়মনের কাছে। এটা বৈধ না অবৈধ, তা তাঁর ব্যাপার। চুলা জ্বললেই হলো।
মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি সায়মন সরকার বলেন, ‘লোকজনের গ্যাস দরকার। তাদের সহায়তা করেছি মাত্র।’
বিচ্ছিন্ন সংযোগ পুনঃস্থাপন করে বিভিন্ন বাড়িতে রান্না হচ্ছে । কালিয়াকৈরে বিচ্ছিন্ন লাইনে ফের সংযোগ: গ্যাস-নৈরাজ্য বন্ধ করতে কালিয়াকৈর উপজেলার সদরচালা ও ভান্নারা ধোপাচালা এলাকায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালায় তিতাস কর্তৃপক্ষ। সদরচালা এলাকায় টাওয়ার মার্কেট থেকে ২০-২৫ ফুট পাইপ তুলে ফেলা হয়েছিল তখন। এতে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকার সব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তখন বেশ কয়েকটি বাড়ি থেকে রাইজারও খুলে ফেলা হয়েছিল।
ভান্নারা ধোপাচালা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অভিযানে বিচ্ছিন্ন লাইনে আবার সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
অবৈধ সংযোগ নেওয়া গ্রাহকেরা জানান, গাজীপুরের তিতাসের ঠিকাদার আ. করিম সরকার তাঁদের এলাকায় অবৈধ্য সংযোগ দিয়েছেন। তিনি এগুলো বৈধ করে দেবেন বলেছেন।
তিতাসের চন্দ্রা জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ২২ এপ্রিল সভা হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত আবার অভিযান শুরু করা হবে।’