শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > বিচার বিভাগ ও সরকারের আস্থাহীনতা

বিচার বিভাগ ও সরকারের আস্থাহীনতা

শেয়ার করুন

সাইদুল ইসলামঃ আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতি থাকায় গত দু’মাসেরও বেশি সময়ে সরকার প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারছে না। এটি যেমন লজ্জার তেমনি ব্যর্থতার। কিন্তু আরো ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, যা স্বাধীন বিচার বিভাগকে করায়ত্ব করার একটি নোংরা অপকৌশলও। কারণ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার উপর অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা থেকেই সরকার তাঁকে প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিল। উপরন্তু তিনিই সরকারের বিষফোঁড়ায় পরিণত হলেন। সরকার তার রাজনৈতিক কুটকৌশল ব্যবহার করে বিষফোঁড়াটি যেনতেনভাবে সেরে ফেললেও ভবিষ্যৎতে যে পুনরায় বিষফোঁড়া হবে না সেই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। এই ধরনের একটি ভয় সরকারকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

এদিকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া ২০১১ সালের ১০ই মে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের মতামতে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে ছিলেন। এবং বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা তাঁর সাথে একমত পোষণ করেছিলেন। আবার বিচারপতি ইমান আলী কোন পক্ষেই ছিলেন না। তাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়াকে বয়োজ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারমুক্ত করে প্রধানবিচারপতি করার ঝুঁকি সরকার নিতে চায় না।

আবার আপিল বিভাগের বর্তমান সকল বিচারপতিগন সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাথে একমত পোষণ করে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিয়েছিলেন। সুতরাং আপিল বিভাগের প্রায় সকল বিচারপতিদের উপর সরকারের আস্থার সংকট রয়েছে। নিয়মানুযায়ী আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে হয়। কিন্তু অতীতে বিভিন্ন সরকার বার বার এই নিয়ম লঙ্গন করেছে। বিচারবিভাগকে নিজেদের করায়ত্ত্ব করে রাখার জন্য বয়োজ্যেষ্ঠতা ডিঙ্গিয়ে নিজেদের পছন্দসই ব্যাক্তিকে প্রধানবিচারপতি বানিয়েছে। সুতরাং ঐ একই দৃষ্টিকোণ থেকে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানবিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সরকার এখন আস্থা অনাস্থার দোলাচলে দাঁড়িয়ে আছে।

লেখকঃযুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক

সূত্র: আমাদের সময়.কম