শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > বিএনপি নেতা হান্নান শাহ্’র ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিএনপি নেতা হান্নান শাহ্’র ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

শেয়ার করুন

আকরাম হোসেন রিপন
চীফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর: সাবেক পাটমন্ত্রী বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ও কাপাসিয়া উপজেলার কৃতিসন্তান প্রায়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আ স ম হান্নান শাহ্’র চতুর্থ মৃতত্যুার্ষিকী আজ রোববার ২৭ সেপ্টেম্বর। এ উপলক্ষে তাঁর পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে হান্নান শাহ্’র রুহের মাগফিরাত কামনায় তাঁর গ্রামের বাড়ি ঘাগটিয়াতে কোরআনখানি, মিলাদ, দোয়া ও স্মরণ সভাসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

হান্নান শাহ্ পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ জানায়, স্মরণ সভায় আধুনিক তথ্য প্রযোক্তি ব্যাবহার করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। হান্নান শাহ্ ১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ৭৪ বছর বয়সে গত ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ১১ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস্ হার্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছিন। সেখানে তার হৃদযন্ত্রের অস্ত্রপাচার করা হয়। র্দীঘ ২১ দিন জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২৭ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

হান্নান শাহ্র পিতা ফকির আব্দুল মান্নান ছিলেন পাকিস্তান আমলের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ১৯৫৬ সালে ঢাকার সেন্টগ্রেগরি স্কুল থেকে মেট্রোকোলেশন পাস এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬০ সালে বিএসসি অধ্যয়নকালে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে সামরিক একাডেমি কাকুল থেকে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮৩ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে থাকাকালীন সময়ে এরশাদ সরকার বাধ্যতামূলক তাকে অবসর প্রদান করেন। হান্নান শাহ্ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন। পরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মনোনীত হন। ১৯৯১ সালে গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পাট মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তৎকালীন বহুল আলোচিত ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের সেনা সমর্থীত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গণতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ডের বিরোদ্ধে সর্ব প্রথম মূখ খোলে কথা বলেছিলেন। তখন খালেদা জিয়াকে দেশ ত্যাগ ও শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে না দেয়ার ভূমিকার ব্যাপক সমালোচনা করেন। গণমাধ্যমে তখন সরকারের সমালোচনার কারণে বার বার হান্নান শাহ’কে জেলে যেতে হয়েছে। দলের এ ক্রান্তিকালে সক্রিয় ভূমিকার কারনে তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত করেন।

হান্নান শাহ্ কৃতি ফুটবলার, হকি ও গল্ফ খেলোয়ার ছিলেন । তিনি ১৯৫৮ সালে ঢাকার ওয়ান্ডার্স ক্লাবের গোল রক্ষক ছিলেন। তিনি বক্সিংয়ে সেনাবাহিনীতে রেকর্ড তৈরী করেছিলেন। বাংলাদেশ সুটিং ফেডারেশনের সভাপতিও ছিলেন। তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে পৃথিবীর ৫০ টির মত দেশ ভ্রমন করেছেন।

হান্নান শাহ্ ছিলেন কাপাসিয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষের আপনজন এবং কাপাসিয়ার উন্নয়নের রূপকার। তার র্দীঘ রাজনৈতিক জীবনে এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়নে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে স্থানীয় শীতলক্ষ্যা নদীর উপর তার নির্মিত ‘ফকির মজনু শাহ্’র সেতু স্মরণীয় হয়ে থাকবে।