রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > রাজনীতি > বিএনপির সমাবেশ: গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন খালেদা

বিএনপির সমাবেশ: গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন খালেদা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ আজ। সমাবেশ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্দদলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার এ সমাবেশের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। রাজধানী ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি জেলার বিএনপির নেতাকর্মীরাও এ সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। লক্ষ্য একটাই, কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বিপুল উপস্থিতির মাধ্যমে সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করা।

সোহরাওয়ার্দীতে অতীতের সমাবেশের সব রেকর্ড ভাঙতে চায় দলটি। সোহরাওয়ার্দীর এই সমাবেশের মাধ্যমে দেশবাসীর পাশাপাশি সরকারকেও কিছু বার্তা দিতে চায় দলটি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, সমাবেশটি জাতীয় রাজনীতি ও বিএনপির জন্য সাংগঠনিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সমাবেশ থেকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন। যা দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমতি পায় বিএনপি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল থেকেই চলছে বিএনপির সমাবেশের মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি।

শনিবার বিকেল থেকে লোকজন জড়ো হতে শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসছেন নেতাকর্মীরা। রাতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীকে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে দেখা গেছে।

একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে অনুমতি পাওয়ায় প্রস্তুতি নিতে হয় তড়িঘড়ি করে। ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে রবিবার সকাল ১০টার পর থেকেই শুরু হচ্ছে সমাবেশের কার্যক্রম।

দলীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে অনুমতি পাওয়ার পর শুরু হয় তোড়জোড়। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আনা হয় বাঁশ, মাইক, চেয়ারসহ সমাবেশের মঞ্চ তৈরির আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম। রবিবার সকাল ১০টার মধ্যেই শেষ করতে হবে সমাবেশের প্রস্তুতি।

শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চ তৈরি ও অন্যান্য কার্যক্রমের প্রস্তুতি দেখতে যান। এ সময় মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার ইচ্ছা করেই শেষ মুহূর্তে এসে অনুমতি দিয়েছে, যাতে লোকসমাগম কম হয়। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না, যেভাবে জনস্রোত ঢাকামুখী হয়েছে তাতে রবিবারের সমাবেশ হবে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে বড় সমাবেশ। সমাবেশ স্থল জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই নেতা।

জানা যাচ্ছে, সমাবেশে অংশ নিতে এরই মধ্যে অনেক নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন। অনেকই আসছেন। তারা জানালেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সমাবেশের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। এই সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলেও আশা তাদের। নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকেই রাতভর সমাবেশস্থলে অবস্থান নেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির এই সমাবেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা। সমাবেশ উপলক্ষে পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালনে গত ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু ওই দিন সমাবেশের অনুমতি মেলেনি। পরে ১২ নভেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে দলটি।

পরে শনিবার দুপুরে ২৩টি শর্ত জুড়ে দিয়ে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয় ডিএমপি। এরপর থেকেই শুরু হয় সমাবেশের প্রস্তুতি।

সমাবেশ স্থলের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন বলেন, সমাবেশের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলায় ১ হাজার নেতাকর্মীকে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব দেয়া হলেও দলের প্রতিটি নেতাকর্মীই স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করবেন। সমাবেশে ঢোকার পথে আর্চওয়ে স্থাপন ও স্বেচ্ছাসেবকরা মেটাল ডিটেকটর নিয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালন করবে।

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন বলে জানিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনই কেবল এই গণসমাবেশের মূল লক্ষ্য নয়। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যে চলমান আন্দোলনকে সুসংহত ও জনগণের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার বার্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দেশের মানুষ মনে করে। এই সমাবেশ সাংগঠনিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সমাবেশ জাতীয় রাজনীতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সমাবেশ থেকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যে বার্তা আমরা তা জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে চাই। আশা করি জনগণকে আমরা সেই বার্তা দিতে পারবো। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, সমাবেশ সফল করতে সহযোগিতা করুন। গণতন্ত্রের পথকে সুষ্ঠু করার জন্য আমাদের যে প্রচেষ্টা তাতে সহযোগিতা করুন।