বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো চতুর্থ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন। এ ধাপে মোট ৯৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। যদিও এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন, তাই কোনো দলের ব্যানারে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও এটিকে দলীয় নির্বাচনই মনে করা হচ্ছে। অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় উপজেলা নির্বাচনকেই লড়াইয়ের মাঠ হিসেবে নিয়েছে দলগুলো। আর তাই লড়াইটাও হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি।
প্রথম ধাপের ৯৭টি উপজেলায় বুধবারের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরাই বেশি জয়লাভ করেছে। ৩৮টি উপজেলায় তাদের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সেই সঙ্গে বিএনপির বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থীও বিজয়ী হয়েছেন। আর জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের প্রার্থীরা ১২ উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ ৩৫টি উপজেলায় নিজেদের প্রার্থীকে জয়ী করতে পেরেছে। অবশ্য আরো কয়েকটি উপজেলায় তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী জয় পেয়েছে।
অথচ গত নির্বাচনে এই ৯৭টি উপজেলার মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান ছিলেন ৬৬ জন। আর বিএনপির মাত্র ১৪ জন, জামায়াত ৮ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীসহ অন্যরা জিতেছিলেন ৯টি উপজেলায়। সে হিসেবে বলা চলে প্রথম দফায় বিএনপি তথা ১৯ দলীয় জোট ভোটারদের কাছ থেকে ‘পজেটিভ’ সাড়াই পেয়েছে।
যদিও ৯টি উপজেলায় ভোটকারচুপি ও কেন্দ্র দখলসহ প্রতিপক্ষের প্রার্থীর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি প্রার্থীরা। এমনকি ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট ও সরকারি তাণ্ডবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার এই ৯ উপজেলা সদরে স্থানীয়ভাবে হরতাল ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
কেন্দ্রীয় বিএনপিও বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে প্রথম পর্বের উপজেলা নির্বাচনকে ৫ জানুয়ারি ধারাবাহিকতা বলে আখ্যা দেয়।
দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘৫ জানুয়ারি নির্বাচনের ধারাবাহিকতা হচ্ছে আজকের উপজেলা নির্বাচন। আজকের নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলে এর পরিনতি একই হতো। আমাদের নির্দলীয় সরকারের দাবি যে সঠিক তা আবার নতুন করে প্রমাণিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী একটি অদ্ভুত নির্বাচন করেছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘অটোমেটিক নির্বাচনের মাধ্যমে অটোমেটিক সংসদের অটোমেটিক প্রধানমন্ত্রী জোর করে বেশকিছু কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে অদ্ভুত নির্বাচন করেছেন। এর প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে পোলিং এজেন্টদের জোর করে বের করে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়েছে।’ এসব ঘটানার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৯৭টি উপজেলা নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়মের পূর্ণাঙ্গ তালিকা নিয়ে কাল সংবাদ সম্মেলনে তা প্রকাশ করা হবে।’
উল্লেখ্য, চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৯৭টি উপজেলার বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ৩৫টি, বিএনপি সমর্থিত ৩৮টি, জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী ১২, জাতীয় পার্টি একটি, ইউপিডিএফ প্রার্থী দুইটিতে, জনসংহতি সমিতি একটি এবং স্বতন্ত্র হিসেবে ৮ জন জয়লাভ করেছেন। বাংলামেইল২৪ডটকম