বুধবার , ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে দেবে না সরকার

বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে দেবে না সরকার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বিএনপিকে সহসাই ঘুরে দাঁড়াতে দেবে না সরকার। যেকোনো আন্দোলন থেকে এ দলটিকে দূরে রাখতে সরকার বিভিন্ন কৌশলকে কাজে লাগাবে। তাছাড়া সাম্প্রতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার পর সহসাই ঘুরে দাঁড়ানোর মতো পরিস্থিতি বিএনপির নেই। পাশাপাশি আন্দোলনের ব্যর্থতা থেকে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যেও চরম হতাশা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আন্দোলনের নামে সহিংস ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে মাঠ পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীর নামে মামলা রয়েছে। তাদের যেকোনো আন্দোলন দমনে এ মামলাগুলোকে কাজে লাগাবে সরকার।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট টানা ৯২ দিন অবরোধ-হরতাল চালিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে চোরাগোপ্তাভাবে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যাসহ সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এতে প্রায় ১৫০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সহস্রাধিক।

আন্দোলনের নামে এসব সহিংস ঘটনায় যে মামলাগুলো রয়েছে সেসব মামলার তদন্তে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারাসহ অনেকেই ফেঁসে যাবেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামেও হত্যা ও সহিংসতার মামলা রয়েছে।

দ্রুতই এসব মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এসব মামলায় সরকার কারো প্রতি কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখাবে না বলেও ওই সূত্রগুলো জানায়।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এসএসসি পরীক্ষা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস, দু’দফার বিশ্ব ইজতেমায়ও বিএনপির এসব কর্মসূচি অব্যাহত ছিলো। মানুষ এ বিষয়গুলোকে সহজভাবে নেয়নি। এই দীর্ঘ সময় সহিংসতা চালিয়ে বিএনপি মানুষের মধ্যে সন্ত্রাসী দল হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। বিএনপির আন্দোলন মানে মানুষের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আগামী বছরের শুরুতে সারাদেশে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর অনুষ্ঠিত হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। স্থানীয় সরকার পর্যায়ের এসব নির্বাচন সব সময়ই সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে এবং এসব নির্বাচনে মানুষ উৎসাহ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অংশ নিয়ে থাকে।

আওয়ামী লীগ নেতারাও মনে করছেন, এসব নির্বাচনের মধ্যে বিএনপি আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার সুযোগই পাবে না।

এদিকে উন্নয়ন ও দেশকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ গড়ে তোলার কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলের মতো বড় প্রকল্পগুলোর কাজ এগিয়ে চলেছে।

পক্ষান্তরে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কোনো কর্মসূচি বিএনপি তুলে ধরতে পারেনি। বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ছাড়া জনগণকে আকৃষ্ট করার মতো কোনো উন্নয়ন কর্মসূচি বা দিক-নির্দেশনা নেই। তাছাড়া বিএনপিকে নিয়ে এই মুহূর্তে জনগণের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাও নেই। রাজনৈতিক দল হিসেবে অনেকটাই আলোচনার আড়ালে চলে গেছে।

এ বিষয়গুলোও আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক বলে দলের ওই নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।

তাছাড়া দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা এবং নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এগোনোর ধৈর্য এখন আর বিএনপির নেতাকর্মীদের অবশিষ্ট নেই। গত জানুয়ারি থেকে তিন মাসের বেশি সময় ধরে চালিয়ে যাওয়া আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই হতাশা নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে আন্দোলন দাঁড় করানোর ক্ষমতা তাদের নেই বলেও আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন।

আগামীতে বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জনগণ খালেদা জিয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি কি নিয়ে আন্দোলন করবেন? আন্দোলনের নামে তিনি মানুষ হত্যা করেছেন। তার আন্দোলন মানে মানুষের জন্য আতঙ্ক।

আবারও যদি খালেদা ওই ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করতে চান তাহলে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় আইন অনুসারে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা নেওয়া হবে বলেও জানান মতিয়া চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি তো ৯২ দিন আন্দোলন করে চরম ব্যর্থ হয়েছে। তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর আন্দোলন করার ক্ষমতা ও পরিস্থিতি তাদের নেই।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না। তারা হয় তো দল গোছানোর চেষ্টা করতে পারে। সেটা করলে ভাল, তাতে তো কোনো বাধা নেই।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির কিভাবে আন্দোলন করবে তাদের কোনো জনসমর্থন নেই। সাংগঠনিক শক্তিও নেই। আন্দোলনের ব্যর্থতায় দলের মধ্যে চলছে হতাশা আর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। আর তারা যদি মনে করে আবারও জ্বালাও-পোড়াও করবে তাহলে তারা সে সুযোগ পাবে না। পরিণতি যা হবার তাই হবে। দলের অস্তিত্ব থাকবে না। সরকার উন্নয়নের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখানে আন্দোলনের নামে উন্নয়নকে ব্যাহত করা জনগণ মেনে নেবে না। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম