শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বাড়ছে রাজস্ব ঘাটতি > সরকারি রাজস্ব কাস্টমস কর্মকর্তাদের পকেটে!

বাড়ছে রাজস্ব ঘাটতি > সরকারি রাজস্ব কাস্টমস কর্মকর্তাদের পকেটে!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

চট্টগ্রাম: চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৩৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৩১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা কম।

একইভাবে চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসের লক্ষমাত্রা আদায়েও ব্যর্থ হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২১ হাজার ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৯ হাজার ৭৪৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। যা নির্ধারিত লক্ষমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৩৩০ কোটি ১০ লাখ টাকা কম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের ঘুষের প্রতি আগ্রহ এবং রাজস্ব আদায়ে অনীহার কারণে ঘাটতি পূরণ সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে কাস্টমসের দুর্নীতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

কাস্টমস কমিশনার হোসেন আহমদ বলছেন, বিশ্ব মন্দার কারণে আমদানি কমে যাওয়ায় লক্ষমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ২৩ শতাংশ গ্রোথ হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ। তবে রাজস্ব ঘাটতি পূরণে বিভিন্নভাবে চেষ্টা জালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে থাকে। এরমধ্যে মিথ্যা ঘোষণা ও ভুল এইচএস কোড(পণ্যের মুল্য নির্ধারণী কোড) ব্যবহার করেই বেশি ফাঁকি দিয়ে থাকে। এসব ফাঁকির বিষয়টি কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে ধরাও পড়ে। কিন্তু অবৈধভাবে টাকা নিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন খোদ কাস্টমস কর্মকর্তারা। এতে সরকারি রাজস্ব চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের কাছে। এর কিছু অংশ ঢুকছে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের পকেটে। ফলে লক্ষমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরের জুলাই মাসে লক্ষমাত্রা ধরা হয় ২ হাজার ৮৬৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২ হাজার ১২৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৭৪০ কোটি ১৬ লাখ টাকা কম।

আগস্ট মাসে লক্ষমাত্রা ধরা হয় ২ হাজার ৩৪১ কোটি ৬৭ লাখ, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ, অক্টোবরে ২ হাজার ৬২১ কোটি ৫৩ লাখ, নভেম্বরে ২ হাজার ৫৬১ কোটি ৯১ লাখ, ডিসেম্বরে ২ হাজার ৫০৫ কোটি ৬১ লাখ, জানুয়ারিতে ২ হাজার ৮২৮ কোটি ৫৪ লাখ এবং ফেব্রুয়ারিতে ২ হাজার ৫৭৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে যথাক্রমে- আগস্টে ২ হাজার ১৯০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৬৫ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ২ হাজার ৪৭৩ কোটি ৯৯ লাখ, নভেম্বরে ২ হাজার ৪৪০ কোটি ৯০ লাখ, ডিসেম্বরে ২ হাজার ৬৪৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, জানুয়ারিতে ২ হাজার ৬১৪ কোটি ৭০ লাখ এবং ফেব্রুয়ারিতে আদায় হয়েছে ২ হাজার ৬৯৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

রাজস্ব ঘাটতি পূরণে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার হোসেন আহমদ বলেন, যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হওয়ার কথা ছিল সে পরিমাণ আমদানি হয়নি। ফলে রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে।

ঘাটতি পূরণ করতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাওনা টাকা আদায় করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ডেফার্ড প্যামেন্ট আদায়ে জোর দিচ্ছি। এছাড়া পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিটে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির বিষয় ধরা পড়েছে। এসব টাকা আমরা উদ্ধারে কাজ করছি।