বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ডের এই তিন দেশ মিলে ৩২শ কিলোমিটার দীর্ঘ এশিয়ান হাইওয়ে নির্মাণ করতে যাচ্ছে। আগামী নভেম্বরে নয়াদিল্লি সরকার এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সই করবে বলে ভারতীয় দৈনিক ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানিয়েছে।
এশিয়ান হাইওয়েকে পাস কাটিয়ে এ সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ভারত যেখানে বাংলাদেশেরও যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এখন ওই তিন দেশ মিলে আগেই চুক্তি করতে যাচ্ছে তারা।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড দিয়ে চীনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে যাতায়াতব্যবস্থা সহজ করতে একটি সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালি থেকে মিয়ানমারের ঘুনধুম সীমান্ত পর্যন্ত দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়ক নির্মাণে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলেও জানা গিয়েছিল। এই সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হলে ভারত-বাংলাদেশ-মিয়ানমার-থাইল্যান্ডের মধ্যে সরাসরি যাতায়াত করা যাবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।
কিন্তু ভারতীয় পত্রিকাটি বলছে, ত্রিদেশীয় ওই সড়কটি ভারতের মোরেহ থেকে থ্যাইল্যান্ডের মায় সোট এলাকা পর্যন্ত যাবে। এছাড়া অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সড়ক নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছে একসপ্রেস।
এ সম্পর্কে ভারতের সড়ক, পরিবহন ও হাইওয়ে মন্ত্রণালয় সংক্ষেপে মোরথ জানিয়েছে,‘প্রোটোকলের সমস্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কেবল শুল্ক বিভাগের কিছু কাজ বাকি আছে। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে এই সড়ক নির্মাণের জন্য আনুষঙ্গিক অনুমোদন পেতে মিয়ানমারের চার মাস সময় লাগবে। তবে নভেম্বরের মধ্যেই চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করবে তিন দেশের সরকার।’
দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার স্বার্থে অবকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টিকে বরাবরই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ওই মন্ত্রণালয়ে এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ত্রিদেশীয় এ সড়কটি মেকং অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের উত্তর অংশকে সংযুক্ত করবে। তাই মোদী সরকারের ‘পূবে তাকাও’ প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে এই সড়ক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরো বলেছেন, ‘ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ডের মধ্যে এই মহাসড়কটি নির্মিত হলে তা আসিয়ান জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সার্কের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে জোরদার করবে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের পর ২০১৬ সালের মার্চ মাসের আগেই এ উপলক্ষে একটি মোটর শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে।’
এই সড়ক উপমহাদেশ ও আসিয়ানের মধ্যে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা করছে ভারত ।
প্রসঙ্গত, এশিয়ান হাইওয়ে হিসেবে এসকাপের পরিকল্পনায় চিহ্নিত মহাসড়কটি হলো : জাপান থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান ও তুরস্ক হয়ে ইওরোপের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু ১৯৯৩ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এসকাপের বৈঠকে নতুন হাইওয়ে ম্যাপ তৈরি করা হয়। এসকাপ এএইচ-১ নামে প্রধান রুটটি যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকা ও সিলেট হয়ে তামাবিল সীমান্তে পৌঁছাবে। এসকাপের এএইচ-২ নামের দ্বিতীয় রুটটি পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্তে শুরু হয়ে দিনাজপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও ঢাকা হয়ে আবারও সিলেটের একই তামাবিল সীমান্তে গিয়ে শেষ হবে। এরপর হাইওয়েটি তামাবিল থেকে দুর্গম পাহাড়ি পথ বেয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং ও আসামের রাজধানী গৌহাটির পাশাপাশি মনিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম হয়ে দক্ষিণে যাবে। মিজোরাম থেকে এশিয়ান হাইওয়ে মিয়ানমারের প্রদেশ শান, কুচিন, কারেন, চীন প্রভৃতির ভেতর দিয়ে ইয়াংগুন পর্যন্ত যাবে। বাংলামেইল২৪ডটকম