বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপ আগামী রোববার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এ সংলাপে নিরাপত্তা সহযোগিতায় বাংলাদেশকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এসব প্রস্তাবের ব্যাপারে বাংলাদেশের মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দেয়া হবে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠেয় সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) খুরশিদ আলম। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি বিল টড। তবে টডের অধ:স্তন কোনো কর্মকর্তা ঢাকা এলে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল আহসান।
নিরাপত্তা সংলাপের প্রস্তুতি নিয়ে আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে পররাষ্ট্র ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, সংলাপে নিরাপত্তা সহযোগিতায় দুই দেশের মধ্যে ইস্যুগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা ও মতবিনিময়ে এটি নিয়মিত একটি ফোরাম। সেখানে বিস্তৃত পরিসরে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বৈশ্বিক নিরাপত্তা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং সাইবার ক্রাইম বা তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহাররোধ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশ মানবিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেবে। এর মধ্যে রয়েছে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা।
রাজধানীর কলাবাগানে ইউএসএআইডি’র কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান তার বন্ধুসহ নিজ বাসায় জঙ্গিদের হাতে খুন হয়েছিলেন। এর পর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি আক্রমণে দেশী-বিদেশী নাগরিক ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হন ২২ জন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশওয়ালসহ যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে নিরাপত্তা জোরদারে করনীয় সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করেন। নিশা দেশাই সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহযোগিতার প্রস্তাবগুলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল খানের কাছে উত্থাপন করেন। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ তার প্রয়োজনের নিরিখে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সহযোগিতা প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করবে।
গত ২৯ আগস্ট মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ঢাকা সফর করে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক সহযোগিতা দেবার আগ্রহের কথা জানান। বাংলাদেশ সরকার আইএসের অস্তিত্ব অস্বীকার করলেও জন কেরি ঢাকায় দেয়া জনবক্তৃতায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠির যোগসূত্রের বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপন করে বলেছেন, এ ব্যাপারে যথেষ্ঠ তথ্য-প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে।নিরাপত্তা সংলাপে কারিগরি ও প্রশিক্ষণ খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাইতে পারে বাংলাদেশ।