বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ভবনধস বা আগুন লাগার মতো ঘটনায় সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার পরও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। ভারতের এক্সিম ব্যাংক পরিচালিত একটি গবেষণার বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “সম্প্রতি ভবনধস বা আগুন লাগার মতো ঘটনায় সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার পরও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে পেছনে ফেলেছে ভারতকে। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আমেরিকায় ভারতের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩২০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। একই সময়ে আমেরিকায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির হার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে পৌঁছায় ৪৯০ কোটি ডলারে।”
এক্সিম ব্যাংকের প্রধান ব্যবস্থাপক প্রাহালাথান আইয়ার ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, “সাম্প্রতিক তথ্য না থাকায় রপ্তানির সর্বশেষ চিত্র পেতে আমেরিকার আমদানির তথ্য নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেছে এবং এ জন্য নীতিমালায়ও কিছু পরিবর্তন এনেছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, “২০০৫ সালে বাংলাদেশ থেকে বছরে ৬৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানির হতো। ২০১২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৯৯০ কোটি ডলারে। এই সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের গড় প্রবৃদ্ধি হয় ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ।”
অন্যদিকে একই সময়ে ভারতের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ৮৭০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে হয় এক হাজার ৩৮০ কোটি ডলার। একই সময়ে ভারতের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গড় প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
এক্সিম ব্যাংকের গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ এ খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং চট্টগ্রাম বন্দরে অগ্রাধিকার প্রদানসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়।
প্রাহালাথান আইয়ার এ প্রসঙ্গে বলেন, “যেহেতু বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে পোশাক রফতানি থেকে, তাই এই খাতকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হয়েছে তাদের।”
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে পোশাক কারখানার ভবনধস ও কয়েকটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির পোশাক খাত নিয়ে পশ্চিমা ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। এ বিষয়টি ভারতের জন্য সুযোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে আইয়ার নেতিবাচক জবাব দেন।
আইয়ার বলেন, “এসব ঘটনার পর ২০১৩ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি কমে যায়। ফলে ওই মাসে পোশাক রপ্তানিতে দেশটির মাত্র ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। কিন্তু পরের মাসেই ৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশটি ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়ায়।”
আইয়ার জানান, তৈরি পোশাক রপ্তানি করে দক্ষিণ এশিয়ার এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ভারতে রয়েছে। কিন্তু তারা হয় বাংলাদেশ থেকে অথবা শ্রীলঙ্কা থেকে পোশাক সংগ্রহ করে।