শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > বাঁশের সাঁকোতে বন্দী ৫০ হাজার মানুষ

বাঁশের সাঁকোতে বন্দী ৫০ হাজার মানুষ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ গত দুই দশক ধরে একটি বাশের সাঁকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন জামালপুরের বকশিগঞ্জের ৮ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ।
সাধারণ জনগণ, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্কুল শিক্ষার্থীরাও এই বাঁশের সাঁকোতে যাতায়াত করছেন। ১৯৮৬ সালে নীলাক্ষিয়া ইউনিয়নের পাগলাপাড়া রোডে একটি খালের স্থানীয় সরকারের তৈরী করা কংক্রিটের সেতুটি ধ্বংস হয়। এর পর খাল পারাপারারের জন্য ১৯৮৮ সালে ওই বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে গত দু দশকে ৮ গ্রামের মানুষের জন্য এটি হয়ে পড়ে একমাত্র সম্বল।
পুরোনো সেতুটি ধ্বংসের ফলে বকশিগঞ্জ উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মেরুরচর ও গোয়ালেরচর ইউনিয়ন। পরে স্থানীয়রা নিজেরাই ওই বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করেন। দুর্বল হয়ে যাওয়া সাঁকোতে দুর্ঘটনাও ঘঠেছে বেশ কয়েকবার। কয়েক বছর আগে সাঁকো থেকে পড়ে নিহত হয়েছে হায়দার আলির ছেলে ছামিজাল, অমল হকের ছেলে শোয়েব আলী, আনার আলীর ছেলে ইব্রাহীম। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
সাঁকোটি শক্তপোক্ত না হওয়ার কারণে স্থানীয় কৃষকরা তাদের পণ্য নিয়ে বাজারে যেতে পারছেন না। ফলে অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। স্থানীয় চেয়ারম্যান, আইন প্রণেতা ও মন্ত্রী বলছেন যত দ্রুত সম্ভব এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে।
পাগলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আনারকলি বলেন, ‘সাঁকোর বাঁশ ভেঙ্গে কয়েক বছর আগে আমার বড় ভাই সোহরাব আলী মারা যান। তিনি ভ্যানচালক ছিলেন। সোহরাব মারা যাওয়ার পর তার পরিবার অচল হয়ে যায়। দুই সন্তানের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে । এখন তারা কোনওরকমে দিনযাপন করছে।”
তিনি বলেন, ”ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে হাঁটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষা মৌসুমে অধিকাংশ ছাত্রের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কারণ তখন সেতু পার হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।”
পাগলা গ্রামের ইউপি মেম্বার রুকন উদ্দিন বলেন, ”দুর্ঘটনার কারণে অনেক লোকই সেতুটি পার হতে ভয় পায়।” নীলাক্ষিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ”স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে সেতু নির্মাণ করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনও ব্যবস্থা নেননি। ‘এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী একেএম হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ”ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমরা তখনই কাজ শুরু করতে পারবো যখন বরাদ্দ পাওয়া যাবে।” তবে বরাদ্দ কখন পাওয়া যাবে সে বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্ক