রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > বন্যা পরিস্থিতির অবনতি সিলেটে দুই শতাধিক স্কুল বন্ধ

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি সিলেটে দুই শতাধিক স্কুল বন্ধ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বানের পানি গ্রাস করছে সিলেট বিভাগের একের পর এক গ্রাম। মানুষজন পানিবন্দি জীবন যাপন করছেন। পাহাড়ি ঢল আর বর্ষণে তৃতীয় দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সিলেটের। ইতিমধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি। অন্যগুলোর উঠোন কিংবা বারান্দায়। এ কারণে গত রোববার থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগরসহ কয়েকটি উপজেলার ঢুকে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই তলায় খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। গতকাল সিলেট জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও দুর্যোগ কমিটির জরুরি সভায় এসব তথ্য জানিয়েছে সিলেটের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন- আগামী ৭ই জুলাই থেকে সিলেটের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্যার পানি ঢুকে পড়ার কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে নেয়া হয়েছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার গতকাল দুপুরে জানিয়েছেন- এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো কোনোটিতে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সিলেট জেলায় এ পর্যন্ত ৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আশ্রয়হীন শতাধিক পরিবার বসবাস করছে। প্রয়োজন হলে আরো আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে। তিনি বলেন- প্রশাসনিক সার্বিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ওদিকে- সিলেটে দিন দিন পানি বাড়ছে। আগামী কয়েক দিনের জন্য কোনো সুখবর নেই। আবহাওয়া অফিস ও পানি উন্নয়নবোর্ড যে তথ্য জানিয়েছে তাতে বোঝা গেছে আরো প্রায় এক সপ্তাহ বৃষ্টি থাকবে। পাশাপাশি উজান থেকে প্রবল ঢল নামতে পারে। ইতিমধ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের অর্ধেকের বেশি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল সিলেটের জেলা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- সিলেটে গতকাল পর্যন্ত ১৬১টি  প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এই পরিসংখ্যান বাস্তবের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ- তারা হিসেবে মাদরাসা কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করেননি। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, কুশিয়ার নদী বিপদসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বর্তমানে পানি বাড়ছেও না, কমছেও না। সিলেটের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন- দুর্গত এলাকায় ১২৮ টন চাল ও দুই লাখ ৭৮ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। গতকাল আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে- সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আর সে ক্ষেত্রে বৃষ্টি হলে পানি বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর। সিলেটের কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছেন- এ বন্যায় বোরোর পর সিলেটের উজানে ফলানো আমন ফসল তলিয়ে গেছে। প্রায় ৫০শ’ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে জানান তারা। সিলেট আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ও আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ জানিয়েছেন- সিলেটে জুনের শেষ দিকে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। এখন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়ার খবরে দেখা যাচ্ছে আগামী এক সপ্তাহ সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এতে করে সিলেট অঞ্চলে আরো পানি বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। এদিকে- গতকাল সিলেটের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন- বন্যার কারণে অনেকেই গৃহহীন হয়েছেন। জরুরি জিনিসপত্র বাড়ি রয়েছে। স্থানীয়ভাবে যাতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা যায় সেটি পুলিশ দেখছে। পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকায় যাতে চুরি-ডাকাতি কম হয় সে ব্যাপারেও পুলিশ সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে- গতকাল দুপুরের পর সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার নাজামানারা খানুম, জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ারসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা। ওই এলাকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। বিকালে বালাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া জানিয়েছেন- সরকারি তরফ থেকে যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে সেটি পর্যাপ্ত নয়। এর জন্য প্রয়োজন বেসরকারি উদ্যোগ। এজন্য প্রবাসীদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মৌলভীবাজারে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম
ইমাদ উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে জানান, মৌলভীবাজার জেলায় তৃতীয়বারের মতো বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বন্যায় কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ২৪টির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়ক পথের কয়েকটি স্থান পানিতে ডুবে যাওয়ায় বড়লেখার সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বন্ধ রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তিন উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষ। গবাদিপশুগুলোর বাসস্থান ও চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে খেটে খাওয়া মানুষ সব হারিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জানা যায়, তিন উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ২০টি, প্রাইমারি ও মাদরাসা পর্যায়ে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকেছে। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ছাড়াও স্কুলের শ্রেণিকক্ষ ও অফিস রুম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ঈদের বন্ধ শেষে প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হলেও বন্যার কারণে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হাওর পাড়ের বাসিন্দারা এ বছর চৈত্রের অকাল বন্যায় যেমন একমুঠো বোরো ধান ঘরে তুলতে পারেননি, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাওরের মাছ, হাঁস, জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ। সর্বশেষ আউশ ধান ও আমনের বীজতলার ক্ষতিতে এলাকার কৃষি ও মৎস্যজীবীরা চরম বিপাকে। হাওর পাড়ের ৩ উপজেলার মানুষ দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় এখন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। এসব এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘর ২ থেকে ৬ ফুট পানিতে নিমজ্জিত। ইতিমধ্যে অনেকেই নিজ বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের কাছে কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় জুড়ী উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক ভবনের কার্যালয়ের ভেতরসহ কুলাউড়া পৌর এলাকার ৩টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বি জানান, কুলাউড়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০-৮০টি গ্রাম পানিবন্দি। তার উপজেলা পরিষদেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ২০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা সম্পূর্ণ পানির নিচে। এর ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তিনি জানান, কয়েক দফা ত্রাণ দেয়া হয়েছে এবং এখনো অব্যাহত রয়েছে। বড়লেখা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে অব্যাহত বন্যায় বর্নি, দক্ষিণবাগ, তালিমপুর ও সুজানগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এ উপজেলার প্রায় ৭০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিনের বৃষ্টির কারণে হাওরে পানি বাড়ছে আর নতুন নতুন বসতি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্নাবান্না করার মতো শুকনো কোনো জায়গা না থাকায় লোকজন সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বড়লেখা উপজেলার ইউএনও এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে এ পর্যন্ত মোট ১১৫টি দুর্গত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছি। বন্যা দুর্গতদের জন্য ৩৯ টন জিআর চাল ও জিআর ক্যাশ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো দ্রুত বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরো বরাদ্দ প্রাপ্তির আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বড়লেখা ও জুড়ি আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ এম সাহাব উদ্দিন  এমপি বলেন, কয়েক দফা প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়েছে মৌলভীবাজার জেলা। ইতিমধ্যে জেলার প্রত্যেক উপজেলা সরকারি ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আগামীতে আরো ত্রাণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রাজনগর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওরের পানি নামতে না পারায় এ উপজেলায় প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ রয়েছেন পানিবন্দি। আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের অন্তেহরি গ্রাম। একই কারণে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের কাদিপুর ও নাজিরাবাদ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। একই অবস্থা মনু ও ধলাই নদীর তীরবর্তী ২০-২৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের। নদীগুলোর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গ্রামের পর গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। ধলাই নদীর তীরবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলা ও হাইল হাওরের তীরবর্তী শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১৫-২০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, বড়লেখা, কুলাউড়া ও জুড়ি উপজেলার সোনাই, জুড়ী নদী ও শতাধিক পাহাড়ি ছড়া দিয়ে হাকালুকিতে বৃষ্টির পানি নামে। এসব ছড়া দিয়ে ভারতের পানিও নামে। আর হাকালুকি হাওরের পানি কুশিয়ারা নদী দিয়ে বের হয়। বর্তমানে কুশিয়ারা নদীর যে স্থান দিয়ে পানি নামে সেখানে বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তাই পানি বের হতে না পেরে উপজেলার গ্রামগুলো নিমজ্জিত হয়েছে। কুশিয়ারার পানি নেমে গেলে তখন অন্তত শহর ও শহরতলির পানি নেমে যাবে।
রাজনগরে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, রাজনগরে কুশিয়ারা নদী ও কাউয়াদীঘি হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চার ইউনিয়নের ৪০টিরও বেশি গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি উঠে যাওয়ার কারণে কার্যত বন্ধ রয়েছে ৮টিরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া মৌলভীবাজার-রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কে বাস যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে রাজনগর উপজেলার কুশিয়ারা নদী ও কাউয়াদীঘি হাওরে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কুশিয়ারা নদীর ও কাউয়াদীঘি হাওর তীরের ফতেহপুর, উত্তরভাগ, মুন্সিবাজার, পাঁচগাঁও ইউনিয়নের ৪০টিরও বেশি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। হাওর তীরের গ্রামগুলোর মানুষ একেবারেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এসব গ্রামের কৃষকেরা। দেখা দিয়েছে গো খাদ্য সংকট। এছাড়াও হাওরের পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কের বেশ কিছু এলাকা। এতে ফতেহপুর ইউনিয়ন ও বালাগঞ্জ এলাকার সঙ্গে বাস যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট যানে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, পিআইও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন। কামালপুর ও বকসিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০টির মতো পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দেয়া জিআর চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হবে। এছাড়াও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার ও একবেলা খিচুড়ি দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বিয়ানীবাজারে বিএনপির ত্রাণ বিতরণ
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে জানান, সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের উদ্যোগে বিয়ানীবাজার দুবাগ ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। রোববার দুবাগ বাজারে এ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিয়ানীবাজার থানা বিএনপির সভাপতি নাজমূল হোসেন পুতুল। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-কোষাধ্যক্ষ এড. আহমদ রেজা। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুশ শুক্কুর, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য আতাউর রহমান, মো. হারুনুর রশিদ, মাসুক আহমদ, ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাফিজ, ইউনিয়ন বিএনপির সহ- সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ, প্রচার সম্পাদক কামাল আহমদ, পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নজমূল হোসেন, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ আলম, ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহমদ, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি কায়ছার আহমদ কানন, সাধারণ সম্পাদক জামিল আহমদ চৌধুরী, কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আলম আহমদ, আবুল কালাম, এনাম, আব্দুল মতিন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণের সভাপতি বাবু লাল দে, সাধারণ সম্পাদক অনুপ দে প্রমুখ। ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দুর্গত এলাকায় সরকারের ত্রাণ তৎপরতা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। যা হচ্ছে শুধু কাগজে, বাস্তব চিত্র-ভিন্ন। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে সরকারের ত্রাণ এখনো পৌঁছায়নি। তবে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক দলগুলো বন্যাদুর্গতদের পাশে ত্রাণ বিতরণ করছেন। গরিবদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

মানবজমিন