রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > বন্যা পরিস্থিতির অবনতি > যমুনার-ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপরে

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি > যমুনার-ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপরে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলাসহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তরাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নতুন করে আরও বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়াসহ উত্তরের জেলাগুলোতে গত চব্বিশ ঘন্টা টানা বৃষ্টি এবং উজানের পাহাড়ি ঢল এবং ভারত তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেইট খুলে দেওয়ায় যমুনা নদীর পানি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সারিয়াকান্দি ও ধুনট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সারিয়াকান্দি, ধুনট এবং সোনাতলা উপজেলার ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার্তরা উপায় না পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয়ের জন্য ছুটে এসেছে।
ক্রমান্বয়ে বগুড়ার তিন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিতে শুরু করেছে। দিন দিন বাড়ছে বানভাসী মানুষের সংখ্যা। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নদী গর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তু হারা হয়ে পড়ছে যমুনাতীরবাসী। সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর, কামালপুর, চন্দনবাইশা ও কর্ণিবাড়ি, সোনাতলা উপজেলার মধুপুর, তেকানি চুকাইনগর, পাকুল্লা, ধুনটের ভান্ডারবাড়ী, গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন বন্যা কবলিত এলাকায় পরিণত হয়েছে। তিন উপজেলার এসব ইউনিয়নগুলোর পনের হাজার পরিবার ইতোমধ্যেই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে  নি¤œাঞ্চলগুলোর লোকালায়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে গৃহহারার সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এসব এলাকার বানভাসী মানুষ থাকার জায়গা না পাওয়ার পাশাপশি খাদ্য, বিশুদ্ধপানি এবং তিব্র জ্বালানি সংকটে দিন পার করছে। সামান্ন ত্রাণ সামগ্রী এসব এলাকায় দিলেও বেশির ভাগ মানুশের ঘরে পৌছেনি ত্রাণের প্যাকেট।
কুড়িগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ধরলায় ১৩ সে. মি.,তিস্তায় ৫ সে. মি, এবং ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে ১২ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫ সে.মিটার পানি বেড়েছে।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর-কুমারপাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর দিয়ে পানি ঢুকে সংলগ্ন ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর পাকা সড়কে পানি ওঠায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলার ৯টি উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের সাড়ে ৩শ’ গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে তিন লাখ মানুষ। শতাধিক প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় নিমজ্জিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় ভাঙনের মুখে পড়েছে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের দুটি স্কুল। কয়েকটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল দেখা দেয়ায় তা মেরামতের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জেলা ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ১০৫ মে. টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যা বিতণের প্রক্রিয়া চলছে। মানবজমিন