শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > বট বৃক্ষের ছায়া নামক বিশ্ব বাবা দিবস আজ

বট বৃক্ষের ছায়া নামক বিশ্ব বাবা দিবস আজ

শেয়ার করুন

আকরাম হোসেন রিপন
চীফ রিপোর্টার ॥
আজ জুন মাসের তৃতীয় রবিবার সেই হিসাবে বটবৃক্ষ নামক সেই শব্দটি বাবা দিবস আজ। যে ব্যক্তিটি দিনরাত পরিশ্রম করে সন্তানের ও পরিবারের মুখে একটু হাসি ও খাবারের জন্য তিনি হচ্ছেন বাবা। সন্তান যখন বিপদে পড়ে বা কোনো সমস্যাগ্রস্থ হয় তার মাথার উপর ছাতার মতো ছায়া হয়ে যে ব্যক্তিটি দাঁড়ায় তিনি হচ্ছেন বাবা। দিন-রাত পরিশ্রমের পর বাড়িতে এসে যখন সন্তানের মুখে একটি বার বাবা ডাক শুনতে পায় ভুলে যায় তার সারাদিনের পরিশ্রম, ভুলে যায় সারাদিনের ক্লান্তি তিনি হলেন বাবা। অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে সারাদিন যখন শরীর থেকে ঘাম ঝরতে থাকে সে তখন ভাবে তার এই ঘামের বিপরীতে রয়েছে সন্তান ও পরিবারের সুখ-শান্তি তখন তার শরীরের ঘাম যার পরম সুখের মনে হয় তিনিই বাবা। পৃথিবীতে এমন দ্বিতীয়টি নেই যিনি কারো কাছে হার মানতে চায়। বাবা হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি সন্তনের কাছে হার মেনে খুশিতে আত্মহারা হন। একজন বাবা চায় তার সন্তান যেন তার চাইতে বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন হয়ে খ্যাতি অর্জন করতে পারে।

জানা যায়, প্রতি বছর জুন মাসের ৩য় রবিবার পালিত হয় বিশ্ব বাবা দিবস। সেই হিসাবে আজ “বিশ্ব বাবা দিবস” যুক্তরাষ্ট্রে সর্ব প্রথম বাবা দিবস পালন করা হয়। তবে ঠিক কবে থেকে সেটি সঠিক জানা যায়নি। বাবা দিবসের প্রবক্তা হচ্ছেন সোনারা স্মার্ট ডোড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথম বাবা দিবস উদযাপিত হয় স্পোকেনস শহরে। শহরের তরুণ-তরুণীরা দুটি করে গোলাপ নিয়ে যান চার্চে। একটি লাল, অন্যটি সাদা। লাল গোলাপ জীবিত পিতাদের শুভেচ্ছার জন্য, আর সাদা গোলাপ মৃত পিতাদের। এইভাবে শুরু করেন বাবা জাতির প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালবাসার প্রচলন। কিন্তু এটিকে অনুমোদনের জন্য কংগ্রেস নানা দ্বিধা, দ্বন্দ্বে ভুগতে থাকেন। ১৯১৬ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন বিষয়টি অনুমোদন করেন। ১৯২৪ সালে প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কোলিজ এটিকে জাতীয় দিবসে রূপ দেন। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন রাষ্ট্রীয়ভাবে জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস উদযাপনের ঘোষণা দেন। সোনারা ডোড মারা যান ১৯৭৮ সালে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে হারভাঙ্গা পরিশ্রমে যাওয়ার সময় সন্তান যখন বাবার কুপর টেনে ধরে বাবা তাকে একটু আদর করে দেন সারাদিনের পরিশ্রম সেই সকালের আদর টুকুই ভুলিয়ে রাখে। বাবার হাত ধরে উঠে দাঁড়নোর সৌভাগ্য বেশিরভাগ সন্তানের হলেও বর্তমান সময়ে সন্তানের হাত ধরে উঠে দাঁড়ানোর সৌভাগ্য সকল বাবার হয়ে উঠেনা। তবুও থাকে না তাঁর মনে কোন কষ্ট সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলেই বাবা খুশি হন। বাবা হল এমন এক ব্যাংক যা সন্তানের জন্য কখনো ফুরোয় না বাবার কাছে কিছু চাইলে সন্তনকে কখনোই বাবা ফিরিয়ে দেন না। গত কিছুদিন আগেও তাই প্রমাণ মিলেছে সন্তানের একটু খাবারের জন্য চুরি করতে গিয়েছিল এক পিতা। সন্তান যখন খাবার চায় বাবা তার শরীরের রক্ত বিক্রি করে হলেও তার সে চাহিদা পূরণ করে। বাবার তুলনা শুধুই বাবা সন্তানের ভরণপোষণ থেকে শুরু করে শিক্ষা চিকিৎসা সবক্ষেত্রেই রয়েছে বাবার অবদান। তাই পৃথিবীতে বাবার চেয়ে আপন আর কোন সন্তনের কাছে দ্বিতীয় নেই কেউ। সকল অভাব পূরণ হলেও বাবার অভাব কখনোই পূরণ হবার নয় একজন সন্তনের পরিচয় ও নির্ভর করে তার বাবার ওপর। যে কোনো উৎসব-পার্বণে বাবা নিজের জন্য কিছু কেনার সুযোগ না হলেও শত চেষ্টা করে সন্তনের চাহিদা পূরণ করেন। উৎসবের দিনে সন্তানের মুখের একটু হাসি বাবার প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। ছোটবেলা থেকে বাবার শাসনেই আমরা সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠি। হয়ে উঠি একজন সফল মানুষ কিন্তু যখন সফল হই তখন আমরা ভুলে যাই সেই ব্যক্তিটিকে, যিনি আমার সফলতার চাবিকাঠি। সন্তনের কষ্টে বাবা হয়তোবা হাউমাউ করে কাঁদতে পারেন না কিন্তু নীরবে চোখের জল ফেলেন। আবার সেই সন্তনই যখন বাবাকে কষ্ট দেয় তখনো তিনি হাউ মাউ করে কাঁদতে পারেন না বুকে চাপা দিয়ে শুধু নীরবে চোখের জল মুছেন। সন্তানের সফলতায় একজন বাবা কখনো উল্লাস করেন না, তবে মনের মধ্যে তার যে সুখের সৃষ্টি হয় তা যেন একজন বাবার এই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। সেই বাবাই যখন বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন জায়গা হয়না সন্তনের মস্তবড় ফ্ল্যাটের একটু কুনায় তখন তিনি অভিশাপ দেননা কান্নাও করেন না শুধু চোখ মোছেন আর বলেন তুমি ভালো থেকো খোকা। এই হল বাবা আমার বাবা।