সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শীর্ষ খবর > বজ্রকণ্ঠের গর্জন শুনবে বিশ্ব

বজ্রকণ্ঠের গর্জন শুনবে বিশ্ব

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এ দিনেই বজ্রকণ্ঠে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ঐতিহাসিক ভাষণ’ ঘোষণা দেওয়ায় এ বছর দিবসটি বিশেষ গুরুত্বসহ পালন করছে বাংলাদেশ।

শুদ্ধতায় ভরা যার প্রাণ, কণ্ঠেও ঝরে তার শুদ্ধতার মান। রাজনীতির কবি তিনি। সেদিন রাজনীতির কবিতাই শুনিয়েছিলেন এ বাংলাকে। অমন তেজদীপ্ত কণ্ঠে ধরণীর বুকে আর কোনো কবি কখন’ই কবিতা পাঠ করেনি। আর অমন তেজদীপ্ত কণ্ঠে কবিতা শুনে শ্রোতারাও হয়েছিলেন মুগ্ধমনা।

৭ মার্চ, ১৯৭১ সাল। একটি মাত্র ভাষণ। আর তাতেই হাজার বছরের আবেগ। যে ভাষণে আবেগের গাঁথুনিতে শক্তি সঞ্চয় করে বীর বাঙালি অস্ত্র ধরেছিল হাজারও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। এদিনই মুক্তির ঝাণ্ডা উড়িয়ে বাঙালি তার স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে মরণপণ শপথ নেয়।

সেদিনের মাহেন্দ্রক্ষণে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো মানুষের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

তার এই ঐতিহাসিক ভাষণের পর স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আর কোনো প্রয়োজন মনে করেনি মুক্তিকামী মানুষেরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয়ে এ ঘোষণা দেন মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা। এ স্বীকৃতি যেন বাংলা, বাঙালি বাংলাদেশ, সর্বপরি মানুষের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন পুনঃব্যক্ত করা।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার আহ্বানের অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটায়। স্বাধীনতার যে ডাক তিনি দিয়েছিলেন, তা যেন বিদ্যুৎ গতিতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

সেদিন বেলা তিনটা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ময়দান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। স্লোগান ছিল পুরো ময়দানজুড়ে ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’। উপস্থিত জনতাকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধেও প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।’

১৯ মিনিটের সেই ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে দারুণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। আজও তা অনুপ্রেরণার উৎস। সে ভাষণে আজও কেঁপে কেঁপে ওঠে ধরণী। আজও গোটা বিশ্ব শুনবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের তেজদীপ্ত সেই স্বাধীনতার ভাষণ।