বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
রেলের কোচ সংকট নিয়মিত বিষয়। এক বছর ধরে আন্তঃনগর ট্রেনের কোচ আমদানি হওয়ায় সংকট কিছুটা কমে এসেছে। তবে গত চার বছর ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। শুধু কোচ সংকটের কারণে রেলের বার্ষিক ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আবদুল হাই বলেন, রেলের উন্নয়নে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এসব টাকা ব্যবহার হচ্ছে না। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে অনেক ধরনের সংকট রয়েছে। কোচ সংকট অন্যতম। নতুন করে কোচ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তখন কোচ সংকট থাকবে না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্র জানায়, গত চার বছর ধরে পূর্বাঞ্চলে চলমান মেইল এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনে দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকট রয়েছে। মেইল ও লোকাল ৩১টি ট্রেনে ওয়ার্কিং টাইম টেবিল (ডব্লিউটিটি-৫২) অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড কম্পোজিশন (দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ) থাকার কথা ছিল ১৬৪টি। কিন্তু বর্তমানে চলমান আছে ১০২টি। ঘাটতি রয়েছে ৬২টি কোচ। যে ১০২টি কোচ চলমান আছে, তার অর্ধেকই বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে পূর্বাঞ্চলে গড়ে দৈনিক ৬২টি করে দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকট রেখেই ট্রেন চালাতে হচ্ছে।
রেলের দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকটের আসন ও আয় পর্যালোচনায় দেখা গেছে, একটি দ্বিতীয় শ্রেণির কোচে আসন থাকে ৬০টি। ৬২টি কোচে ৩ হাজার ৭২০টি আসন থেকে প্রতিদিন ভাড়া পাওয়ার কথা (গড় ভাড়া ৫০ টাকা হিসেবে) ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি থেকে আয় বাদেই ৩৬৫ দিন হিসেবে রেলওয়েতে রাজস্ব যোগ হওয়ার কথা ৬ কোটি ৭৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে আন্তঃনগর ট্রেনে নতুন নতুন কোচ যুক্ত হলেও লোকাল ও মেইল ট্রেন দিন দিন কোচ সংকটে পড়ছে। এই কোচ সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীদের কথা চিন্তা করে রেলওয়ের প্রধান পরিচালন তত্ত্বাবধায়কের (পূর্ব) কার্যালয় থেকে রেলওয়ের প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশল (পূর্ব) বিভাগকে গত চার বছরে অনেকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। সবশেষ গত ১৩ সেপ্টেম্বর ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংযোজন করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এর আগে ৫ বার চিঠি দেওয়া হলেও কোচ সংকটের আশু সমাধান দেয়নি রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। মূলত সংকটের পাশাপাশি পুরনো দ্বিতীয় শ্রেণির কোচগুলো মেরামতকাজের ধীরগতিতে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কোচ সংকটে রয়েছে রেলওয়ে। কোচ সংকটের বিষয়টি দেখে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগ। যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগের প্রধান মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এই বিভাগে দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশলী পার্থ সরকারও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র : আমাদের সময়