বুধবার , ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আর তর্ক-বিতর্ক চাই না

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আর তর্ক-বিতর্ক চাই না

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশে কোনো তর্ক-বিতর্ক দেখতে চান না জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, যাঁর যে যোগ্য আসন, সে আসনই তিনি পাক।’

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সৈয়দ আশরাফ এসব কথা বলেন।
এদিকে অনুষ্ঠানে সামনের দিকে বসাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী, ওনার জন্মদিন ১৫ আগস্ট না। তারপরেও তিনি ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন, কেক কাটেন। আমি কয়েক দিন আগে বলেছি, আমরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পার করেছি। আমরা চাই সবাই মিলে সর্বজনীনভাবে জাতির পিতার মৃত্যুদিবস পালন করি। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা কায়েম করতে হবে আমাদের। এই বিভাজন আমরা চাই না।’

সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে প্রস্তাব করেছিলাম। আপনি দয়া করে ১৫ আগস্ট আপনার জন্মদিন পালন না করে ১৬ তারিখে করেন বা ১৭ তারিখে করেন। কিন্তু আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে এই ১৫ তারিখ বেছে নিয়েছেন, আপনার জন্মদিন হিসেবে। এইভাবে কোনো দিন দেশ গড়া চলতে পারে না। এবারও আমি ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে ১৫ আগস্ট সর্বজনীনভাবে পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছি। কারণ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই বাংলাদেশে আমরা কোনো তর্ক-বিতর্ক দেখতে চাই না। আমরা চাই, যে যাঁর যোগ্য আসন, সেই আসনই তারা পাক। বঙ্গবন্ধুর একমাত্র প্রাপ্য এই বাংলাদেশ।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি সাঈদ খোকনকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম এর আগে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কেউ কী জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। সে বলে যে না। এবার প্রথম। আমি মেয়রকে ধন্যবাদ জানাই। একটি নতুন সূচনা করার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ধন্যবাদ। আমি আশা করব, সারা বাংলাদেশের প্রতিটি সিটি করপোরেশন, মিউনিসিপ্যালটি এবং সব নির্বাচিত সংস্থা জাতির পিতার জন্মদিন ও মৃত্যুদিনের তারা যেন অনুষ্ঠান করেন। আমি আশা করব, আমাদের এই আহ্বানের পর বাংলাদেশের সব নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবেন। ভবিষ্যতে জন্মদিনে উৎসব করার জন্য, শোক দিবসে শোক পালন করবেন।
একই আলোচনা সভায় শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, প্রথমে মনে করা হয়েছিল-বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড হচ্ছে পারিবারিক হত্যাকাণ্ড। কিন্তু তাঁকে হত্যার কয়েক দিন পরে যখন জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হলো তখন স্পষ্ট হয়েছে-বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে হত্যা করা হয়েছে।

আমু বলেন, সবাই মনে করে খন্দকার মোশতাক হচ্ছে মীরজাফর। হ্যাঁ, মোশতাক মীরজাফর। আর রবার্ট ক্লাইভ ছিল জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান আড়ালে থেকে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করেছিল। তাই দুই মাস যেতে না যেতেই তিনি ক্ষমতা দখল করে বসে স্বরূপে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে না হারালে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যই উন্নত দেশে পরিণত হতো। ২০৪১ সাল লাগত না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আবদুর রাজ্জাক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কামরুল ইসলাম, আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংসদ মন্নুজান সুফিয়ান, শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ। এ ছাড়া আলোচনা সভায় সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাঁর লেখা একটি কবিতা পড়ে শোনান।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শোক দিবসের আলোচনা সভা চলাকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বসাকে কেন্দ্র করে তিন দফা ধস্তাধস্তিতে ও চেয়ার ছোড়াছুড়িতে লিপ্ত হন। মঞ্চ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়েও তাঁদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছিল না। সাংসদ ফজলে নূর তাপসের বক্তব্যের সময় চেয়ার ছোড়াছুড়ি বেশি শুরু হয়। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় মঞ্চে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ অপর অতিথিরা বসে ছিলেন।