শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > বকেলে বৈঠকে বসছেন রাষ্ট্রপতি > সার্চ কমিটি হচ্ছে কাল, থাকছেন দুই বিচারপতি

বকেলে বৈঠকে বসছেন রাষ্ট্রপতি > সার্চ কমিটি হচ্ছে কাল, থাকছেন দুই বিচারপতি

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার সার্চ কমিটির নাম ঘোষণা করবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি কমিশন গঠনের বিষয়ে এই কমিশনের জন্য আইন করে কমিশনার নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। তিনি আইন করতে চান। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে তিনি আপাতত সার্চ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই সার্চ কমিটির মাধ্যমেই আগামী কমিশনের নিয়োগ দিতে চান। সার্চ কমিটির কারা কারা সদস্য হতে পারেন তাও মোটামুটি তিনি বিবেচনায় রেখেছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির গঠন বিষয়ে ও নাম চূড়ান্ত করার জন্য আজ সোমবার বিকেলে বঙ্গভবনে বৈঠকে বসবেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে থাকবেন তার সামরিক সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে ও তার ব্যক্তিগত সচিব, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। রাষ্ট্রপতি তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। এরপর তিনি সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা ও চূড়ান্ত করবেন নাম। বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে এই তথ্য।

বঙ্গভবনের সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই সার্চ কমিটি গঠন করার জন্য তিনি সোমবার বিকেলে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে সার্চ কমিটির বিষয়ে ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে। সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা চারজনই করা হবে নাকি এর বেশি হতে পারে এই ব্যাপারে সূত্র জানায়, এখনই বলা যাচ্ছে না। বৈঠকে বসেই এই ব্যাপারে আলোচনা হবে। আলোচনার পর নাম ঠিক করা হবে। সব সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিই দিবেন। কিন্তু আলোচনা করে নিলে সুবিধা হবে মনে করেই তিনি তা করছেন।

একটি সূত্র আভাস দিয়েছে সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা পাঁচজন হতে পারে। কারা কারা থাকছেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, প্রাথমিক আলোচনা চলছে। তবে কারা কারা থাকবেন এটার জন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। কমপেক্ষ দুই জন বিচারপতি থাকবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

এর আগের যে সার্চ কমিটি করা হয়েছিল ওই সার্চ কমিটির সদস্য হিসাবে যে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ছিলেন এবার তাদের রাখা হচ্ছে কিনা এই ব্যাপারে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেছেন, ওই ধরণের কোন পরিকল্পনা করা হয়নি। বিষয়টি রাষ্ট্রপতি আলোচনা করেই করবেন। সিদ্ধান্ত তিনি নিলেও বিষয়টি যাতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তিনি তেমন সিদ্ধান্তই নিবেন।

একত্রিশ দলের প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষ করেছেন রাষ্ট্রপতি। তা পর্যালোচনা শেষ করে তিনি এখন ঠিক করছেন কাদেরকে রাখবেন। আর কাদেরকে রাখা হলে এনিয়ে কোন বিতর্ক হবে না। কারণ কমিশন গঠন করার জন্য এর আগের প্রক্রিয়া হ”েছ তাদেরকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সার্চ কমিটি গঠন। ওই কমিটি গঠনই যদি বিতর্কিত হয় তাহলে সেটা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন রাষ্ট্রপতি। এই জন্য তিনি সবার জন্য ভালো হবে, সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন সার্চ কমিটি ও কমিশন গঠন করতে চান।

বঙ্গভবন সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া প্রস্তাবের মধ্যে আওয়ামী লীগ সার্চ কমিটি ও কমিশনে কারা কারা থাকতে পারেন এমন কোন নাম কিংবা পদবির কথা বলেননি। আর বিএনপি কোন নামের কথা না বললেও তারা পদের কথা বলেছেন। আর ওই পদের জন্য তারা সাবেক বিচারপতিদের পদবি বলেছেন। কিন্তু কোন নাম বলেননি। বিএনপি ছাড়া অন্যান্য দল তাদের মতো করে প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি সুনির্দিষ্ট করে সার্চ কমিটির সদস্যদের পদবি বলার কারণে রাষ্ট্রপতিকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হচ্ছে। অন্তত তাদের প্রস্তাবের একজন হলেও রাখার চেষ্টা হবে। যাতে করে বিএনপি এনিয়ে সার্চ কমিটির বিষয়ে কোন আপত্তি করতে না পারে।

সূত্র জানায়, সোমবার বিকেলেই সার্চ কমিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে এরপর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। মঙ্গলবার এই কমিটি গঠন করা হয়ে যাবে। এই সংক্রান্ত গেজেটও প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সার্চ কমিটি হয়ে গেলে এরপর তারা বেশি সময় পাবেনও না। কারণ ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশন গঠন করতে হবে। আগামী একসপ্তাহ থেকে দশ দিন সার্চ কমিটিকে সম্ভাব্য কমিশনারদের নাম বাছাই করার জন্য সময় দেওয়া হতে পারে। এরমধ্যে সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য যাদেরকে যোগ্য মনে করবেন এই রকম দশটি নাম দিবেন। ওই দশটি নাম থেকে রাষ্ট্রপতি পাঁচটি নাম চূড়ান্ত  করবেন। নাম চূড়ান্ত করার পর এখন চারজনকে নিয়োগ দিবেন। আর বাকি একজনকে নিয়োগ দিবেন আরো এক সপ্তাহ পরে। কারণ নির্বাচন কমিশনের বর্তমান চার কমিশনারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। আর বাকি একজনের মেয়াদ শেষ হবে চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি। সেই হিসাবে একজন পরে দায়িত্ব নিবেন। তবে দায়িত্ব পরে নিলেও নিয়োগ একসঙ্গেও দেয়া হতে পারে।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি এবারের কমিশন আইন করার পর গঠন করবেন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। কারণ সময় কম। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে আইন প্রণয়ন করতে গেলে আইনটি পরিপূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ নাও হতে পারে। ছোটখাটো ত্রুটি ও বিচ্যুতি রয়ে যেতে পারে। তাতে করে আইনটি প্রণয়ণের শুরুতেই বার বার সংেশোধন করার প্রয়োজন হতে পারে। তাই তিনি আইন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। কিন্তু এই কমিশন নিয়োগ দেওয়ার জন্য তা প্রযোজ্য হচ্ছে না। আগামী কমিশন যাতে নির্বাচন কমিশন আইনের অধিনে নিয়োগ করা সম্ভব হয় সেই ব্যবস্থাই করবেন। আর একটি পূর্ণাঙ্গ আইন করাও সম্ভব হয় সেই ব্যাপারেও নির্দেশ দিবেন। এছাড়াও নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আরো কয়েকটি বিষয়েও রাষ্ট্রপতি একত্রিশ দলের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন।